Notification texts go here Contact Us Download Now!

বাংলাদেশের ব্যাংকিং সেক্টরের ঝুঁকি কমাতে করণীয়।

বাংলাদেশের ব্যাংকিং সেক্টরের বর্তমান অবস্থা, বাংলাদেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থার সমস্যা ও সমাধান, বাংলাদেশের ঝুঁকিপূর্ণ ব্যাংকের তালিকা ২০২৩
Informative Desk
Please wait 0 seconds...
Scroll Down and click on Go to Link for destination
Congrats! Link is Generated


 

বাংলাদেশের ব্যাংকিং সেক্টরের ঝুঁকি কমাতে করণীয়।


বাংলাদেশের ব্যাংকিং সেক্টরে বর্তমানে ব্যাপক তারল্যসংকট প্রত্যক্ষ করা যাচ্ছে।  এর মধ্যে সাত-আটটি ব্যাংক তীব্র তারল্যসংকট মোকাবিলা করে পথ চলছে। কয়েকটি ব্যাংক আছে, যারা শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করে। এছাড়া প্রচলিত ধারার কয়েকটি ব্যাংকও এই তীব্র তারল্যসংকটের ঝুকিতে।এই ব্যাংকগুলোতে অভ্যন্তরীণ সুশাসনের অভাবের সাথে সাধারণ গ্রাহকদের আস্থার সংকটও রয়েছে। বিগত দুই-তিন বছর ধরে আস্তে আস্তে এই ব্যাংকগুলোতে তারল্যসংকট ঘনীভূত হয়েছে। এত দিন ধরে এটা খুব একটা উপলব্ধি করা নাগেলেও বর্তমানে  তা তীব্রতর হয়েছে।

তারল্যসংকটে পড়া ব্যাংক গুলোর পরিচালনা বোর্ড মাঝে মাঝেই এমন সব সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা ব্যাংক ব্যবসার জন্য সুখকর ছিল না। যার ফলে এসব ব্যাংক একপর্যায়ে দুর্বল ব্যাংকে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে ব্যাংক গুলো বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছ থেকে স্পেশাল প্রভিশনিংয়ের মাধ্যমে ঋণ গ্রহণ করে তাদের ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করছে অথবা আমানতকারীদের চাহিদা মেটাচ্ছে।

 

বাংলাদেশের ব্যাংকিং সেক্টরের ঝুঁকি কমানো বা ব্যাংক বাঁচাতে যা করণীয় তার কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণের সুপারিশ নিম্মে পেশ করা হলো :-


মৌলিক কাঠামো শক্তিশালী করা: -

 ব্যাংকিং সেক্টরের মৌলিক কাঠামো, যেমন রেগুলেটরি ফ্রেমওয়ার্ক এবং গভর্ন্যান্স পদ্ধতি, শক্তিশালী করা জরিুরী। নিয়মিত অডিট এবং পর্যালোচনা ব্যবস্থা ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন নিশ্চিত করতে হবে।


শিক্ষা প্রশিক্ষণ: -

ব্যাংকিং কর্মীদের নিয়মিত প্রশিক্ষণ দেওয়া তাদের সচেতনতা বৃদ্ধি করা। ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার কৌশল সম্পর্কে শিক্ষামূলক কর্মসূচি চালু করা।


ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি: -

ব্যাংকগুলোর ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি উন্নত করে, ক্রেডিট, মার্কেট, এবং অপারেশনাল ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি আরো কার্যকর করা।

ব্যাংক লোন সম্পর্কে ইসলামের বিধান কি ?

প্রযুক্তির ব্যবহার: -

প্রযুক্তির সাহায্যে ঝুঁকি সনাক্তকরণ এবং ব্যবস্থাপনা সহজ করাপ্রয়োজন। ডেটা অ্যানালিটিক্স আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের AI ব্যবহার ঝুঁকি পূর্বাভাসে সহায়ক হতে পারে।


গ্রাহক পরিচিতি কেওয়াইসি (KYC): -

 গ্রাহকদের পরিচিতি নিশ্চিত করা এবং KYC পদ্ধতি কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করলে অ্যান্টি-মানি লন্ডারিং সন্ত্রাসী অর্থায়ন প্রতিরোধে সহায়ক হবে।


অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা:  -

দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখা ব্যাংকিং খাতে বিনিয়োগের পরিবেশ উন্নত করা। সরকারি নীতিমালা এবং অর্থনৈতিক সংস্কারের মাধ্যমে ব্যাংকগুলোর সুস্থ কার্যক্রম নিশ্চিত করা জরুরী।


জনসচেতনতা বৃদ্ধি: -

ব্যাংকিং সেবাগুলির প্রতি গ্রাহকদের সচেতনতা বৃদ্ধি করা এবং সঠিক তথ্য প্রদানের পরিবেশ নিশ্চিত করা।


নির্ভরযোগ্য তথ্যের ব্যবহার: -

ব্যাংকগুলোকে তাদের ঋণগ্রহীতা এবং অন্যান্য ক্লায়েন্টের সম্পর্কে নির্ভরযোগ্য এবং আপডেটেড তথ্য সংগ্রহ করতে হবে। এর মাধ্যমে ক্রেডিট ঝুঁকি কমানো সম্ভব হবে।


অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা: -

ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা শক্তিশালী করণ এবং নিয়মিতভাবে এর কার্যকারিতা পর্যালোচনা করতে হবে। এর মাধ্যমে দুর্নীতি অকার্যকর ব্যবস্থাপনা প্রতিরোধ করা যাবে।


শ্রেণীবদ্ধ ঋণ ব্যবস্থাপনা: -

 শ্রেণীবদ্ধ ঋণ (Non-performing loans) মনিটরিং এবং ব্যবস্থাপনা করার জন্য কার্যকর পদ্ধতি প্রয়োগ করা ও উচ্চ শ্রেণীবদ্ধ ঋণের প্রভাব কমানোর জন্য দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা।


নতুন প্রযুক্তি গ্রহণ: -

 ব্লকচেইন, ডিজিটাল ব্যাঙ্কিং ফিনটেক সলিউশনের মাধ্যমে ঝুঁকি মোকাবেলা করার ব্যবস্থা গ্রহন করা। এতে ব্যাংকিং কার্যক্রম আরো কার্যকরী হবে।


বিভিন্নতা এবং বৈচিত্রমযতা: -

 ব্যাংকের পোর্টফোলিওকে বৈচিত্র্যময় রাখতে হবে, যেন কোন এক খাতে বেশি নির্ভরতা না হয়। এতে সামগ্রিক ঝুঁকি হ্রাস পাবে।

ব্যাংকিং খাতের সুশাসন প্রতিষ্ঠা সংকট উত্তরণ

রেগুলেটরি কমপ্লায়েন্স: -

 নিয়ম বিধিমালা অনুসরণের জন্য ব্যাংকগুলোকে জোরালোভাবে মনিটরিং এর আওতায় আনা। নিয়ম ভঙ্গ করলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা।


ঝুঁকি মূল্যায়ন: -

নিয়মিতভাবে ঝুঁকি মূল্যায়ন করতে হবে যাতে ব্যাংকের জন্য নতুন ঝুঁকির সূচনা হলে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহন  করতে সহায়ক হয়। ব্যাংকগুলোকে ঝুঁকি মোকাবেলার জন্য বিভিন্ন কৌশল তৈরি করে ঝুঁকি হ্রাস পলিসি উদ্ভাবন করতে হবে।


বিপর্যয় পরিকল্পনা: -

ব্যাংকগুলোর জন্য একটি বিপর্যয় পরিকল্পনা (Contingency Plan) তৈরি করা, যা প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় কার্যকর হবে।


সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সমন্বয়: -

কেন্দ্রীয় ব্যাংক অন্যান্য নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করা। যাতে সেক্টরের সামগ্রিক স্বাস্থ্যের ওপর নজরদারী করা ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করা যায়।


বাজার গবেষণা: -

 ব্যাংকগুলোর জন্য নিয়মিত বাজার গবেষণা করা জরুরী, যাতে বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি, গ্রাহক চাহিদা, এবং প্রতিযোগিতা বিশ্লেষণ করা যায়।


আন্তর্জাতিক মান অনুসরণ: -

আন্তর্জাতিক ব্যাংকিং স্ট্যান্ডার্ড,- বাসেল কমিটির নির্দেশনা (Basel) অনুসরণ করা। এর মাধ্যমে সেক্টরের স্থিতিশীলতা বৃদ্ধি পাবে।


সামাজিক দায়িত্ব:  -

ব্যাংকগুলোকে তাদের সামাজিক দায়বদ্ধতার দিকে নজর দিতে হবে। অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য ক্ষুদ্র ব্যবসা উদ্যোক্তাদের প্রতি সহায়তা প্রদান করা উচিৎ।


প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা: -

ব্যাংকের জন্য কিছু প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন, যাতে অর্থপাচার এবং সন্ত্রাসী অর্থায়ন প্রতিরোধে বিশেষ নজর দারী করা যায়।


ডিজিটাল নিরাপত্তা: -

ডিজিটাল ব্যাংকিং সেবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সাইবার সিকিউরিটি ব্যাবস্থা বাড়ানো। গ্রাহকের তথ্য সুরক্ষিত রাখতে প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি ব্যবহার করা আবশ্যক।

বাড়িতে বসে টাকা উপার্জনের দারুন অ্যাপ আনছে গুগল

বৈদেশিক বিনিয়োগ: -

 ব্যাংকিং সেক্টরে বৈদেশিক বিনিয়োগকে উৎসাহিত করা এবং বিদেশী বিনিয়োগকারীদের জন্য সুবিধা সুরক্ষা প্রদান নিশ্চিত করা।


বিভিন্ন ঋণ প্রোগ্রাম ও পরিশোধের সহজ উপায় : -

বিভিন্ন ধরনের ঋণ প্রোগ্রাম তৈরি করা, যা বিশেষ করে কৃষি, শিল্প, এবং ব্যবসায় সহায়তা করবে।ঋণ পরিশোধের জন্য গ্রাহকদের জন্য সহজ এবং নমনীয় উপায় তৈরি করতে হবে, যেন তারা সহজেই ঋণ পরিশোধ করতে পারেন। ঋণ নিবন্ধনের প্রক্রিয়াকে সহজ দ্রুত করা, যাতে গ্রাহকরা দ্রুত সেবা পেতে পারেন।


স্থায়ী উন্নয়ন লক্ষ্য: -

ব্যাংকগুলোর উন্নয়ন কর্মকাণ্ডকে সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট গোল (SDG) এর সঙ্গে সংযুক্ত করে পরিবেশবান্ধব প্রকল্পে বিনিয়োগ করা।


নতুন আর্থিক পণ্য: -

ব্যাংকগুলোকে নতুন উদ্ভাবনী আর্থিক পণ্য সেবা তৈরির জন্য স্বচেষ্টো হওয়া, যা গ্রাহকদের বিভিন্ন চাহিদা পূরণ ও উৎসাহিত করবে।


গ্রাহক সেবার উন্নয়ন: -

 গ্রাহক সেবার মান উন্নত করতে প্রতিটি ব্যাংকে একটি শক্তিশালী কাস্টমার সাপোর্ট সিস্টেম তৈরি করতে হবে।কারণ গ্রাহক সন্তষ্টি ব্যবসায় উন্নতির চাবিকাঠি।

Secret method to earn money from home

সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের সংলাপ: -

ব্যাংকিং খাতের সংশ্লিষ্ট সকল স্টেকহোল্ডার, সরকার, নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান, এবং গ্রাহকদের মধ্যে নিয়মিত সংলাপ অব্যহত রাখা।


বিশ্লেষণাত্মক রিপোর্টিং: -

ব্যাংকগুলোকে নিয়মিতভাবে ঝুঁকির ওপর বিশ্লেষণাত্মক রিপোর্ট তৈরি করতে হবে। যাতে পরিচালনার সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়ক  হয়।


আর্থিক অন্তর্ভুক্তি: -

ব্যাংকিং সেবার মাধ্যমে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি বাড়ানোর জন্য উদ্যোগ নেওয়া। গ্রামের সাধারণ মানুষকেও ব্যাংকিং সুবিধায় অন্তর্ভুক্ত করা।


নিয়মিত আপডেট: -

 ব্যাংকগুলোর জন্য নিয়মিতভাবে প্রযুক্তি এবং বাজারের পরিবর্তনের সাথে সাথে নিজেদের নিয়ম- নীতি এবং প্রক্রিয়া আপডেট করা।


সেক্টরাল অডিট: -

 বিশেষ খাতের জন্য সেক্টরাল অডিট পরিচালনা করা, যাতে নির্দিষ্ট ঝুঁকি সনাক্ত করা যায় এবং তদনুসারে ব্যবস্থা গ্রহন করা যায়।


শেয়ারহোল্ডারদের সম্পৃক্ততা: -

 ব্যাংকগুলোর শেয়ারহোল্ডারদেরকে প্রয়োজনীয় কার্যক্রমে সম্পৃক্ত করা, যাতে তারা ঝুঁকির কার্যক্রম সহ সকল নীতি সম্পর্কে জানেন।


বিপর্যয়কালীন প্রশিক্ষণ: -

ব্যাংক কর্মীদের জন্য বিপর্যয়কালীন পরিস্থিতি মোকাবেলার প্রশিক্ষণ দেওয়া, যাতে তারা সংকটের সময় দ্রুত সাড়া দিয়ে কারযকরী পারেন।


মৌলিক অর্থনীতি অধ্যয়ন: -

ব্যাংকগুলোর কর্মীদের মৌলিক অর্থনীতি ফাইন্যান্স বিষয়ে নিয়মিত প্রশিক্ষণ দেওয়া, যাতে তারা উৎসাহ উদ্দীপনার সাথে আরও কার্যকরীভাবে কাজ করতে পারেন।


সামাজিক মিডিয়ার ব্যবহার: -

 ব্যাংকগুলো তাদের সেবা এবং নীতিমালা সম্পর্কে গ্রাহকদের অবহিত করার জন্য সামাজিক মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলির ব্যবহার বৃদ্ধি করে সব সময় ‍আপডেট থাকার চেষ্টা করা।

গ্রাফিক্স ডিজাইনে দক্ষতা অর্জন, স্মার্ট ইনকামের হাতছানি

উপসংহার : -

ব্যাংকিং সেক্টরে তারল্য সংকট শুধু অর্থনৈতিক সক্ষমতার ক্ষেত্রেই ঝুঁকি তৈরি করবে না, বরং এটা অর্থনৈতিক এজেন্টদের মনেও ভয় ধরিয়ে দিতে পারে।এ সংকট সামগ্রিকভাবে আর্থিক বাজারে সিস্টেমিক ঝুঁকি বাড়িয়ে দিচ্ছে। উপরোক্ত আলোচনার আলোকে  এই পদক্ষেপগুলো বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশের ব্যাংকিং সেক্টরের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে কমানো সম্ভব। তাই যত দ্রুত সম্ভব সংকট উত্তরণের কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করা  জাতির জন্য কল্যাণকর।

 

পোস্ট ট্যাগ -

বাংলাদেশের ব্যাংকিং সেক্টরের বর্তমান অবস্থা, বাংলাদেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থার সমস্যা সমাধান, বাংলাদেশের ঝুঁকিপূর্ণ ব্যাংকের তালিকা ২০২৩, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ব্যাংকিং খাতের ধস অর্থনীতির জন্য নেতিবাচক প্রভাব বয়ে আনবে, ঝুঁকি মোকাবেলার কৌশল, আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা pdf, ব্যাংকিং খাতের সমস্যা সম্ভাবনা, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা বই pdf

Post a Comment

Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.
AdBlock Detected!
We have detected that you are using adblocking plugin in your browser.
The revenue we earn by the advertisements is used to manage this website, we request you to whitelist our website in your adblocking plugin.
Site is Blocked
Sorry! This site is not available in your country.