হৃদয়ে কাপন ধরানো এক মরণব্যাধির নাম ক্যান্সার। ব্যয়বহুল চিকিৎসার এ রোগে আক্রান্ত অধিকাংশ
মানুষই মারা যান। অনেকের ধারনা এ রোগ থেকে বাঁচার উপায় নেই বললেই চলে। চিকিৎসা নেয়ার পরও বেশির ভাগ মানুষই মৃত্য বরণ করে।
বিজ্ঞানীদের গবেষণা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর আধুনিক
চিকিৎসা বিজ্ঞান ক্যান্সার প্রতিরোধের উপায় সম্পর্কে আশা বানচক বক্তব্য উপস্থাপন করছে।
ক্যান্সারের ঝুঁকি কমানো ও প্রতিরোধে সহজ কিছু নিয়ম ও খাদ্য তালিকা অনুসরণ করে চললেই ক্যান্সার থেকে বাঁচার উপায় রয়েছে। নিম্নতার তালিকা পেশ করা হলো: -
১) বাতাবিলেবু: -
বাতাবিলেবু, কমলালেবুতে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন সি। ক্যান্সার হওয়ার জন্য দায়ী নাইট্রোজেন যৌগের গঠন রোধে ভিটামিন সি অত্যন্ত কার্যকরী। প্রতিদিন সকালে হালকা কুসুম গরম পানির সাথে লেবুর রস খেলে ক্যান্সার নিরাময় হয়।
ভিটামিন সি সমৃদ্ধ বাতাবি লেবু,কমলা লেবু,ব্রকলি ও ফলমূল- খাদ্যনালী, মূত্রাশয়, সার্ভিকাল ক্যান্সার, পেট ও কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। তাই প্রতিদিন ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল ও শাকসবজি খাদ্য তালিকায় রাখুন।
২) বাদাম: -
ভিটামিন E সমৃদ্ধ চীনাবাদাম কোলন, ফুসফুস, যকৃত, ও অন্যান্য ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। সকাল-বিকাল বদাম খেলে শরীররকে ক্যান্সার থেকে বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব।
৩) হলুদ: -
হলুদের মধ্যে বিদ্যমান ‘কারকিউমিন’
প্রদাহজনিত সমস্যা রোধ ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসাবে কাজ করে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট মানব দেহের টিস্যুর মধ্যে প্রবেশ করে দেহকে ক্যান্সার প্রতিরোধী করে তোলে। শরীরকে ক্যান্সার মক্ত করতে কাঁচা হলুদ সেবন করুন। মাছ,মাংস ও তরকারিতে প্রয়োজন মত হলুদ ব্যাবহার করুন।
৪) মিষ্টি আলু: -
বিটা ক্যারোটিন সমৃদ্ধ সবজি মিষ্টি আলু। চিকিৎসা বিজ্ঞানের
গবেষণা মতে বিটা ক্যারোটিন শরীরে উচ্চ মাত্রায় থাকলে
কোলন, পেট ও ফুসফুসের ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে যায়। গবেষণায় প্রমানিত হয়, মহিলারা মিষ্টি আলুর মত বিটা ক্যারোটিন সমৃদ্ধ সবজি খেলে তাদের স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি প্রায় অর্ধেকে নেমে আসে।
৫) বেদানা: -
এলাজিক অ্যাসিড’ সমৃদ্ধ ফল বেদানা। ক্যান্সারের জন্য দায়ী যৌগকে নিস্ক্রিয় করা ও ক্যান্সার কোষ বৃদ্ধি বন্ধ করতে এলাজিক অ্যাসিড খুবই কার্যকরী।
সালাদ, জুস, মিল্কশেক ইত্যাদি সহ সরাসরি যেকোনো উপায়ে বেদানা খেলে শরীরে ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে।
৬) টমেটো: -
ক্লিনিক্যাল অনকোলজি জার্নালে প্রকাশিত গবেষণায় প্রমাণিত
টমেটো ‘লাইকোপিন’ নামক ক্যান্সার প্রতিরোধক সমৃদ্ধ। লাইকোপিন শরীর কে প্রস্টেট ক্যান্সার সহ অন্যান্য ক্যান্সার থেকে প্রতিরোধ করে। তাই চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা পুরুষ ও মহিলাদের সপ্তাহে অন্তত তিনটি টমেটো খাওয়া অত্যন্ত জরুরী মনে করেন।
৭) চা:
ক্যাটচীন নামক যৌগটি মানবদেহকে ক্যান্সারের আক্রমণ থেকে রক্ষা করে। সম্প্রতি চীনের একটি গবেষণায় প্রমাণিত হয় চা পানকারীরা ক্যান্সারের ঝুঁকি থেকে মুক্ত। তাই জাপানের অভ্যাস করুন।
৮) ধূমপান বন্ধ করুন : -
ধূমপানে বিষ পান। ধূমপানের সঙ্গে ক্যান্সার অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িত। বিশ্বের ৯০ শতাংশ ক্যান্সারই ধূমপানের কারণে হয়। ক্যান্সার মুক্ত জীবন পেতে হলে ধূমপান বন্ধ করুন।
৯) নিয়মিত ব্যায়াম করুন : -
নিয়মিত ব্যায়াম করলে শরীরে হরমোন প্রবাহ, কোষ বৃদ্ধির হার, ইনসুলিন সংবেদনশীলতা
স্বাভাবিক থাকে। শরীরচর্চা করলে দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। তাই প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০ মিনিট শরীর চর্চার করা উচিত ।
১০) অবাঞ্চিত মেলামেশা ত্যাগ করুন: -
অবাঞ্চিত মেলামেশা ক্যান্সারের ঝুকি বাড়ায়। এর থেকে দূরত্ব বজায় রেখে নিজেকে ক্যান্সারের ঝুঁকি মুক্ত করুন। সুরক্ষিত উপায়ে মেলামেশা করুন।
উপসংহার : -
সাবধানতা চিকিৎসা থেকে উত্তম। মরণব্যাধি ক্যান্সার প্রতিটি মানুষের হৃদয়কে প্রকম্পিত করে। এই ক্যান্সার থেকে বাঁচতে হলে উপরে বর্ণিত নিয়ম-কানুন ও খাদ্য অভ্যাসগুলি মেনে চলা প্রয়োজন। প্রাকৃতিকভাবেই এ মরণব্যাধি থেকে বেঁচে থাকতে প্রতি মাসে অন্তত একবার হেলথ চেকআপ করুন।আল্লাহ আমাদের সবাইকে এই মরন ব্যাধি থেকে বেঁচে থাকার তৌফিক দিন,আমিন।
পোস্ট ট্যাগ -
ক্যান্সার প্রতিরোধ করে যেসব
খাবার , ক্যান্সার প্রতিরোধ ফল , ক্যান্সার প্রতিরোধের উপায় , ক্যান্সার হলে কি কি
খেতে হয় , ক্যানসার প্রতিরোধে ১৩ খাদ্য , ক্যান্সার কি ভাল হয় , ক্যান্সার রোগীর
খাবার তালিকা , ক্যান্সার রোগীর মৃত্যুর লক্ষণ