Notification texts go here Contact Us Download Now!

হাড় ক্ষয়,দুর্বল ও ছিদ্র রোগের ঝুঁকিতে বেশি কারা? এবং সেরে ওঠার উপায় কী?

হাড়ের সমস্যা গুলি কি কি , হাড় ক্ষয় হলে কি খেতে হবে , হাড় ক্ষয় রোধের ঔষধ , মেরুদন্ডের হাড় ক্ষয়ের লক্ষণ প্রতিকার , হাড় ক্ষয় রোগের ডাক্তার , হাড
Informative Desk
Please wait 0 seconds...
Scroll Down and click on Go to Link for destination
Congrats! Link is Generated
হাড় ক্ষয়,দুর্বল ও ছিদ্র রোগের ঝুঁকিতে বেশি কারা? এবং সেরে ওঠার উপায় কী?
হাড় ক্ষয়,দুর্বল ও ছিদ্র রোগের ঝুঁকিতে বেশি কারা? 
হাড়কে ক্ষয় ও ভীষণ দুর্বল করে ফেলা এক রোগের নাম হচ্ছে অস্টিওপরোসিস। অস্টিওপরোসিস  হাড়ের ওপরের আবরণ বা কম্প্যাক্ট বোন অনেক পাতলা করে ফেলে  এবং স্পঞ্জি অংশটির ছিদ্র বেড়ে যায় বা ঘনত্ব কমে যায়, যা হাড়কে ভীষণ  দুর্বল করে ফেলে। যার ফলে সামান্য আঘাতেই ভেঙে যায় বা ফেটে যায়।


অস্টিওপরোসিস রোগ কী?
অস্টিও অর্থ হাড় এবং পরোসিস অর্থ পোরস অথবা ছিদ্র।  হাড়ে বেশি পরিমাণে ছিদ্র হলে তাকে অস্টিওপরোসিস রোগ  বলে। হাড়ে বেশি ছিদ্র হওয়া মানে বোন ডেনসিটি বা হাড়ের ঘনত্ব কমে যাওয়া। এতে হাড় ভীষণ  দুর্বল হয়ে পড়ায় সহজেই হাড় ভেঙে যাওয়া বা ফ্র্যাকচার হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। হাড় দুর্বল হওয়ার  স্বাস্থ্যগত এ অবস্থাই হচ্ছে অস্টিওপরোসিস।

হাড়ের কয়টি অংশ থাকে থাকে?
হাড়ের সাধারণত দু'টি অংশ থাকে। উপরের শক্ত আবরণটিকে বলা হয় কমপ্যাক্ট বোন। এবং ভেতরে স্পঞ্জের মতো ছিদ্র ছিদ্র করা স্তরটিকে বলা হয় স্পঞ্জি বোন বা ট্রেবাকুলার বোন।

হাড় কিভাবে দুর্বল হয়?
অস্টিওপরোসিস হলে হাড়ের উপরের আবরণ বা কম্প্যাক্ট বোন অনেক পাতলা হয়ে যায় এবং স্পঞ্জি অংশটির ছিদ্র বেড়ে যায় বা ঘনত্ব কমে যায়, যা হাড়কে দুর্বল করে ফেলে।

অস্টিওপরোসিস রোগ কেন হয়?
হাড় সাধারণত একদিকে ক্ষয় হতে থাকে আরেকটি গঠন হতে থাকে। যদি ক্ষয় হওয়ার গতি, নতুন হাড় গঠন হওয়ার গতির চাইতে কমে যায়, তখনই অস্টিওপরোসিস রোগ হয়। কম্প্যাক্ট বোনের গঠন  প্রতি ১০ বছর অন্তর এবং  স্পঞ্জি বোন প্রতি ৩/৪ বছর পর পর বদলায়। মূলত বয়স বাড়ার সাথে সাথে হাড় দুর্বল হতে থাকে, যা বার্ধক্যের একটি স্বাভাবিক নিয়ম। তবে কিছু মানুষের  হাড় ক্ষয়ের এ প্রবণতা স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি।

কোন বয়সে হাড় বেশি মজবুত থাকে?
ব্রিটেনের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের তথ্য অনুসারে ২৫ থেকে ৩০ বছর বয়সের মধ্যে মানুষের হাড় সবচেয়ে বেশি মজবুত অবস্থায় থাকে। এরপর থেকেই হাড় দুর্বল হতে শুরু করে।

অস্টিওপরোসিসের ঝুঁকিতে কারা বেশি?
পুরুষদের তুলনায় নারীরাই আগে অস্টিওপরোসিসে ভোগেন এবং নারীদের এতে আক্রান্তের ঝুঁকিও বেশি। বিশেষ করে নারীদের মেনোপজের পরে  শরীরে অ্যাস্ট্রোজেন হরমোনের মাত্রা কমে যাওয়ার কারণে  তাদের হাড় ক্ষয় হতে শুরু করে।

সাধারণত ৪৫ বছরের কাছাকাছি বয়সে  বেশিরভাগ নারীর মেনোপজ শুরু হয়। তাছাড়া যেসব নারী ডিম্বাশয় অপসারণ করেছেন তাদেরও হাড় ক্ষয়ের ঝুঁকি রয়েছে। আবার অনেকের জিনগত বৈশিষ্ট্য, খাদ্যাভ্যাস, জীবনযাত্রার উপরেও এ হাড়ের সবলতা নির্ভর করে।

হাড় ক্ষয় রোগে আক্রান্ত হতে পারেন যারা: -

১)  খাবারে  বাছবিচার নেই যাদের।

২) স্থূলতায় ভুগছেন যারা।

৩) অপুষ্টিতে আক্রান্ত যারা

৪)  শুয়ে বসে থাকেন যারা।

৫) কায়িক শ্রম করেন না যারা।

৬)  দীর্ঘমেয়াদী জটিল রোগে আক্রান্ত যারা।

৭) পরিবারে কারো থাকলে বংশ গত।

৮) ধূমপান কারী।

৯) অতিরিক্ত মদপান ও মাদক সেবন কারী।

১০) ভিটামিন ডি ও ক্যালসিয়ামের ঘাটতি যাদের।

১১) হাইপার থাইরয়েডিজম যাদের।

১২) ডায়াবেটিসে আক্রান্ত যারা।

১৩) ক্যান্সারের মতো জটিল রোগে আক্রান্ত যারা। 

১৪) ৩ মাসের বেশি স্টেরয়েড(পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া)  ওষুধের সেবন কারী।

শরীরের কোন কোন হাড় আক্রান্ত হতে পারে?

১) সাধারণত কবজির হাড়,

২) উরুর হাড়

৩) মেরুদণ্ডের হাড় সবচেয়ে দুর্বল অবস্থায় থাকে।

৪) বাহু

৫)কোমর এমনকি পাঁজরের হাড়ও নরম হয়ে যায়।

এমনও পাওয়া  গিয়েছে যে জোরে হাঁচি দেয়ায় রোগীর পাঁজরের হাড় ভেঙে গিয়েছে, মেরুদণ্ডের কশেরুকায় ফাটল ধরেছে।


অস্টিওপরোসিসের লক্ষণ: -
অস্টিওপরোসিসে আক্রান্ত কিনা সেটা আগে থেকে বোঝার কোনো উপায় নেই। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেয়ই হাড় ভাঙলে বা ফ্র্যাকচার হলেই কেবল বিষয়টি সামনে আসে। প্রাথমিক অবস্থায় এই রোগের কোনো লক্ষণ থাকে না। পরিস্থিতি যখন জটিল রূপ নিলেই রোগীর-  ঘাড়ে, কোমরে, মেরুদণ্ডে প্রতিনিয়ত ব্যথা হয়, পেশী ব্যথা বা  দুর্বল লাগে।

বয়স্কদের ক্ষেত্রে : -

১) উচ্চতা কমে যায় বা কুঁজো হয়ে যায়।

২) মেরুদণ্ড শরীরের ভার নিতে পারে না।

৩)  মেরুদণ্ড বাঁকা হয়ে শরীর ঝুঁকে আসে

৪) অনেক সময় হাড় ভেঙে যায়।

৫) পাঁজরের হাড় নিচের দিকে ঝুলে পড়ে।

নোট: - হাড় না ভাঙ্গা পর্যন্ত অস্টিওপরোসিস সাধারণত কষ্টকর হয় না। তবে মেরুদণ্ডের হাড় একবার ভাঙলে সেটা দীর্ঘদিন ধরে ভুগতে হয়।

সতর্কতা : -
অস্টিওপরোসিস রোগটি থেকে শতভাগ সুস্থ হওয়ার ওষুধ নেই। তবে  প্রাথমিক অবস্থায় শনাক্ত করা গেলে হাড়ের ক্ষয়ের গতি কমানো সম্ভব। অস্টিওপরোসিস রোগের প্রাথমিক অবস্থাকে অস্টিওপেনিয়া বলা হয়। এ পর্যায়ে রোগ ধরা পড়লে দ্রুত ব্যবস্থা নিলে অস্টিওপরোসিসের গতি কমানো সম্ভব।

অস্টিওপরোসিস রোগের প্রতিরোধ: -
বিশেষজ্ঞরা অস্টিওপরোসিস রুপটির  প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধের ওপর বেশি জোর দিতে বলেছেন। এ রোগের ঝুঁকি যেহেতু বয়সের সাথে বাড়ে। তাই আগে থেকেই সতর্ক হওয়া জরুরী।  বয়স্কদের শুয়ে বসে থাকার পরামর্শ দিলেও  বয়সের সাথে সাথে শারীরিক পরিশ্রম করা প্রয়োজন।

নিয়মিত কায়িক  বা শরীরচর্চা করলে হাড়ের গঠন মজবুত হয়, হাড় ক্ষয়ের গতি কমে যায় এবং হাড় গঠনের গতি বেড়ে যায়।

হাড় ক্ষয় রোধে কি কি খাবেন?
রক্তের ক্যালসিয়াম, ফসফেট সেইসাথে অ্যাস্ট্রোজেন, টেস্টোটেরন এবং  গ্রোথ হরমোন হাড়ের গঠনে সাহায্য করে। নিন্মে হাড়ের ক্ষয় রোধকারী খাবারের তালিকা দেয়া হল : -

১)ক্যালসিয়াম,

২) ভিটামিন,

৩)প্রোটিন,

৪)ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড,

৫) অ্যান্টি অক্সিডেন্টযুক্ত খাবার

৬) ক্যালসিয়াম ও

৭) ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট খেলে

৮) প্রতিদিন অন্তত ১০ মাইক্রোগ্রাম ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার খেলে এবং নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ নিলে অস্টিওপরোসিস প্রতিরোধ করা সম্ভব।

অস্টিওপরোসিস পরীক্ষা: -
ডুয়েল এনার্জি এক্স রে অ্যাবজরপ-শিওমেট্রি বা সংক্ষেপে ডেক্সা স্ক্যানের মাধ্যমে অস্টিওপরোসিস পরীক্ষা করা হয়। এতে রোগীকে শুইয়ে তার শরীরের বিভিন্ন অংশ স্ক্যান করা হয় যা সম্পূর্ণ ব্যথামুক্ত পদ্ধতি। এটা করতে ১০-২০ মিনিট সময় লাগে।

স্কোর দিয়ে ১জন সুস্থ প্রাপ্তবয়স্ক তরুণের হাড়ের সাথে তুলনা করে রোগীর হাড়ের ঘনত্ব পরিমাপ করা হয়। পরীক্ষায় রোগীর স্কোর টি যদি - ২.৫  বা তার কম আসে, তাহলে বুঝতে হবে তার অস্টিওপরোসিস আছে।

এ পরীক্ষায় রোগীর হাড়ের পরিস্থিতি কয়েকটি গ্রেডে ভাগ করা হয়। রোগীর হাড়ের অবস্থা কোন গ্রেডে আছে, রোগীর বয়স, লিঙ্গ, ভবিষ্যতে হাড় ভাঙার ঝুঁকি কতোটা আছে, আগে হাড় ভেঙেছিল কিনা সেটার ওপর ভিত্তি করে চিকিৎসা দেয়া হয়।

অস্টিওপেনিয়া রোগটি প্রাথমিক অবস্থায়  ধরা পড়ে তার উপকারিতা : - 
অস্টিওপেনিয়া রোগ টি প্রাথমিক অবস্থায়  ধরা পড়লে হাড় সুস্থ রাখতে ও অস্টিওপরোসিস হওয়ার ঝুঁকি কমানো সম্ভব। 

প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নেয়ার পাশাপাশি চলাফেরায় সাবধানতা ও নিয়মিত চোখের দৃষ্টি ও শ্রবণশক্তি পরীক্ষা করতে হবে।

অস্টিওপরোসিসের চিকিৎসা: -
হাড় মজবুত করার ওষুধ দিয়ে অস্টিওপরোসিসের চিকিৎসা করা যায়। মানবদেহের প্যারাথাইরয়েড হরমোন, ক্যালসাটোনিন হরমোন এবং ভিটামিন ডি  সেরাম ক্যালসিয়াম লেভেলকে প্রভাবিত করে।

রোগীর পরিস্থিতি বুঝে চিকিৎসকরা সাধারণত: -

১)  ক্যালসিয়াম

২)  ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট,

৩)  ন্যাসাল স্প্রে,

৪) সাপ্তাহিক বা মাসিক ট্যাবলেট,

৫) বছরে একবার হরমোনাল ইনজেকশন,

৬) হরমোনাল ওষুধ, ইত্যাদি প্রেস্ক্রাইব করে থাকেন। 

মেনোপজের  নারীদের ওষুধ বা ইনজেকশনের মাধ্যমে অ্যাস্ট্রোজেনের মাত্রা বৃদ্ধিতে হাড়ের ঘনত্ব বাড়বে। তবে এসব ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকায় চিকিৎসকের কাছ থেকে জেনে নেয়া প্রয়োজন।

উপসংহার : -
বাংলাদেশ অর্থোপেডিক সোসাইটির তথ্যমতে, দেশের মোট জনসংখ্যার অন্তত ৩ অস্টিওপরোসিসে আক্রান্ত। এবং পুরুষের তুলনায় নারীরাই এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। বয়সের সাথে সাথে হাড় দুর্বল হবেই। একে থামিয়ে রাখার কোনো ওষুধ বা উপায় এখনো  আবিষ্কার হয়নি। তবে চেষ্টা করলে হাড়ের এ রোগ অনেকটা কমিয়ে আনা সম্ভব।

পোস্ট ট্যাগ -
হাড়ের সমস্যা গুলি কি কি , হাড় ক্ষয় হলে কি খেতে হবে , হাড় ক্ষয় রোধের ঔষধ , মেরুদন্ডের হাড় ক্ষয়ের লক্ষণ প্রতিকার , হাড় ক্ষয় রোগের ডাক্তার , হাড় ক্ষয়ের ইনজেকশন , কোমরের হাড় ক্ষয়ের ব্যায়াম , হাঁটুর হাড় ক্ষয়ের ব্যায়াম

Post a Comment

Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.
AdBlock Detected!
We have detected that you are using adblocking plugin in your browser.
The revenue we earn by the advertisements is used to manage this website, we request you to whitelist our website in your adblocking plugin.
Site is Blocked
Sorry! This site is not available in your country.