সালাত (নামাজ) মুসলিম জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। রবের পক্ষ
থেকে বান্দার উপরে সালাত(নামাজ) ফরজ করা হয়েছে। ইসলামের পরিভাষায় ফরজ মানেই হচ্ছে
অবশ্য করণীয়। যা না করে কোনো উপায় নেই। একজন মুসলিম কিছুতেই নামাজকে এড়িয়ে যেতে পারেন
না।
সেজদা আল্লাহর
সাথে বান্দার যোগাযোগ:-
সালাত( নামাজ ) এমন একটি ইবাদত, যার মাধ্যমে বান্দা তার রবের সাথে সরাসরি কানেক্টেড হয়। একাগ্রচিত্তে সালাত (নামাজ) আদায়কারী সেজদা করে যে প্রশান্তি লাভ করে তা কোন কিছু দিয়ে
পরিমাপ করা সম্ভব নয়। ঈমান আনার পর ইসলামের পঞ্চস্তম্ভের দ্বিতীয়টিই হলো সালাত (নামাজ)।
পবিত্র কোরআনের ঘোষণা: -
﴿
فَاِذَا قَضَيۡتُمُ الصَّلٰوةَ فَاذۡكُرُوۡا اللّٰهَ قِيَامًا وَّقُعُوۡدًا
وَّعَلٰى جُنُوۡبِكُمۡۚؕ فَاِذَا اطۡمَاۡنَنۡتُمۡ فَاَقِيۡمُوۡا
الصَّلٰوةَۚ اِنَّ الصَّلٰوةَ
كَانَتۡ عَلَى الۡمُؤۡمِنِيۡنَ كِتٰبًا
مَّوۡقُوۡتًا﴾
অর্থাৎ- তারপর তোমরা নামায শেষ করার পর দাঁড়িয়ে, বসে
ও শুয়ে সর্ব অবস্থায় আল্লাহকে স্মরণ করতে থাকো। আর মানসিক প্রশান্তি লাভ করার পর পুরো
নামায পড়ে নাও। আসলে নামায নির্ধারিত সময়ে পড়ার জন্য মুমিনদের ওপর ফরয করা হয়েছে।
সেজদা সম্পর্কে
আল্লাহর বাণী: -
আল্লাহ এরশাদ
করেন -
﴿
وَاِذۡ قُلۡنَا لِلۡمَلٰٓٮِٕكَةِ اسۡجُدُوۡا
لِاَدَمَ فَسَجَدُوۡٓا اِلَّآ اِبۡلِيۡسَۙ اَبٰى
وَاسۡتَكۡبَرَ وَكَانَ مِنَ الۡكٰفِرِيۡنَ﴾
অর্থাৎ: - অতপর যখন ফেরেশতাদের হুকুম দিলাম, আদমকে সেজদা
করো, তখন সবাই সেজদা করলো, কিন্তু ইবলিস তা
অস্বীকার করলো। সে অস্বীকার করে নিজের শ্রেষ্ঠত্বের অহংকারে মেতে উঠলো এবং নাফরমানদের(কাফেরদের)
অন্তর্ভুক্ত হলো।
সেজদার বৈজ্ঞানিক
উপকারিতা : -
১) সেজদা ব্রেইনকে সুস্থ এবং একটিভ রাখে, কারণ সেজদায়
গেলে মাথা সহ হার্টের উপরের অংশে ব্লাড সার্কুলেশন
বৃদ্ধি পায়।
২) সেজদা কারি ব্যক্তিদের দৃষ্টিশক্তি ও শ্রবণ শক্তি
বেনামাজিদের চেয়ে ভালো থাকে বলে চিকিৎসা বিজ্ঞান
প্রমাণ করেছে।
৩) সেজদা প্রদানকারী মানুষের চেহারায় লাবণ্যতা বাড়ে,
কারণ শিরায় শিরায় রক্ত প্রবাহ বেড়ে যায় এবং তাদের চেহারায় নূর ফুটে উঠে।
৪) মেডিকেল সাইন্সের গবেষণায় প্রমাণিত হলো সেজদা প্রদানকারী
ব্যক্তির মেরুদন্ড,হাটু, কাঁধের জোড়া সহ শরীরের সমস্ত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের জন্যে উত্তম ব্যায়াম।
৫) শরীর তত্ত্ববিদদের ভাষায় সেজদা মহিলাদের গর্ভাশয়ের
সর্বোত্তম চিকিৎসা।
৬) সালাত হচ্ছে নূর। সালাতে সেজদার মাধ্যমে বান্দা কেয়ামতের মাঠে নূর লাভ করবে। সেই নূরই একমাত্র পথ চলার অবলম্বন হবে।
৭) মেডিকেল সাইন্সের
গবেষণায় উঠে এসেছে, গর্ভবতী মায়েরা সালাত এবং কুরআন তেলাওয়াত ও অধ্যায়ন করলে তাদের সন্তান সুস্থ ও মেধাবী হিসেবে পৃথিবীতে আগমন করবে।
সালাতে সেজদা
কারী শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানী হয়:-
৭ম শতাব্দী থেকে ১৪শ শতাব্দী পর্যন্ত মুসলিমদের ঘরে যে
বড় বড়/ শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানী তৈরি হয়েছিল তা গর্ববতী মায়েদের অবদানেই হয়েছিল। তারা
গর্ভাবস্থায় কোরআন হাদিস গনিত সহ জ্ঞান বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয়ে অধ্যায়ন ও গবেষণা
করতেন। যার ফলশ্রুতিতে তাদের সন্তানরা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানী হওয়ার সৌভাগ্য অর্জন
করেছিল।
সেজদা কারী মায়ের
সন্তান মেধাবী হয়: -
গর্ভ অবস্থায় মা যা কিছু চিন্তা,কাজ বা আমল করেন তার সমস্ত কিছুই সন্তানের উপরে প্রভাব পড়ে। কারণ
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন মায়ের গর্ভে ২১ দিনের মাথায় ব্রণের মধ্যে ৪০ হাজার নিউরণ একটিভ
করে দেন। এমন ১০০ বিলিয়ন নিউরণ নিয়ে একটি মানব ব্রেইন তৈরি হয়।
সেজদার বৈজ্ঞানিক
অভিমত : -
আমেরিকার ওয়াশিংটন ডিসির একজন চিকিৎসক- মুসলিমদের সালাতের(নামাজের)
গুরুত্বের কারণ অন্বেষণ করতে গিয়ে আবিষ্কার করেন যে, মানবদেহের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ
অঙ্গ হচ্ছে হার্ট। যা সারা শরীরে পাম্প করার মাধ্যমে রক্তের প্রবাহ চালু রাখে। প্রতিনিয়ত
সারা শরীর থেকে পাম্পিং করে হার্ট রক্ত টেনে আনে এবং আবার তা সারা শরীরে ছড়িয়ে দেয়।
আর মানবদেহে হার্টের অবস্থান থেকে বেশি অংশই হার্টের নিচের দিকে হওয়ায় বুক, পেট, কোমর
ও পায়ের দিকে খুব সহজেই রক্তের প্রবাহ সৃষ্টি হয় এবং চালু থাকে। আর সেজদা দিলে মাথা সহ উপরের অঙ্গ সমূহে রক্ত সঞ্চালন বাড়ে।এতে মানুষ শারীরিক
সুস্থতাসহ কল্যাণ লাভ করে।
উপসংহার : -
আলহামদুলিল্লাহ! লাখো কোটি শুকরিয়া সে মহান রবের, যিনি
সালাতের মতো সুন্দর সুন্দর আমল দিয়ে আমাদের দুনিয়া ও আখিরাতের জীবনকে সুচারুরূপে সাজিয়ে
নেয়ার সুযোগ করে দিয়েছেন। আল্লাহ আমাদের সবাইকে সঠিকভাবে সালাত আদায় করার তাওফিক দিন।
আমিন।
পোস্ট ট্যাগ
-
সিজদার বিজ্ঞান বই pdf download , নামাজের বৈজ্ঞানিক
উপকারিতা , রুকু ও সিজদার মাধ্যমে কী উপকার হয় , কুরআনে সিজদার ইতিহাস , সিজদা নিয়ে
হাদিস , তাহাজ্জুদ নামাজের বৈজ্ঞানিক উপকারিতা , সিজদাহ্ বিজ্ঞান , সূরা আস সাজদাহ এর ফজিলত