জীবন সচ্ছলতার সাথে পরিচালনার জন্যে সকালের অর্থের প্রয়োজন হয়।
হালাল উপার্জনের ব্যাপারে ইসলাম বরাবরই উৎসাহিত করে। সাম্প্রতিক কালে ব্লগ ফ্রিল্যান্স
সাংবাদিকতা ও অনলাইন আয়ের একটা প্রধান মাধ্যম হয়ে উঠছে। বর্তমানে ব্যক্তিগত ডায়রীর পরিবর্তে ব্লগ একটি সামাজিক যোগাযোগ
মাধ্যম হিসেবে কাজ করে । ব্লগ ব্যবহারকারীরা সেখান থেকে তাদের প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ
করেন ও তাদের মন্তব্য প্রকাশ করেন।
ব্লগ কি?
ব্লগ শব্দটির ইংরেজ Blog. বাংলায় এর অর্থ দিনলিপি বা ব্যক্তিকেন্দ্রিক
পত্রিকা। মূলত ব্লগ হল অনলাইনে ব্যক্তিগত দিনলিপি
বা ব্যক্তিকেন্দ্রিক পত্রিকা। ব্লগ শব্দটি মূলত ওয়েব ব্লগের সংক্ষিপ্ত রূপ। যিনি ব্লগে
লিখেন বা পোস্ট করেন তাকে ব্লগার বলা হয়। ব্লগাররা প্রতিনিয়ত তাদের ওয়েবসাইটে কনটেন্ট
যুক্ত করেন এবং ব্যবহারকারীরা সেখানে থেকে
পড়াশোনা ও তথ্য সংগ্রহ করে নিজেদের জ্ঞান বৃদ্ধি করতে পারেন।
ব্লগিং এর ইতিহাস তথ্য
: -
ইন্টারনেট জগতে “ব্লগ” এর
জনপ্রিয়তা দিন দিন বৃদ্ধি পাচছে। Blog শব্দটির আবির্ভাব হয় Weblog থেকে। ১৯৯৭
সালের ১৭ ডিসেম্বরে মার্কিন নাগরিক জন বার্জার
Weblog শব্দটি সর্বপ্রথম ব্যবহার করেন। এর ঠিক দু’বছর পরে ১৯৯৯ সালের এপ্রিল
ও মে মাসের মাঝা-মাঝি সময়ে পিটার মহলজ নামের এক ব্যাক্তি Weblog শব্দটিকে Web এবং
Blog ভেঙ্গে দুই ভাগ করেন। এর পর থেকেই সারা
বিশ্বব্যাপী Blog এর জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে।
ব্লগ থেকে কি পরিমাণ আয়
করা যায়?
ব্লগিং থেকে অর্থ উপার্জনের নির্দিষ্ট কোন সীমা নেই। এটা নির্ভর করে ব্লগার কোন উপায়ে অর্থ উপার্জন করেন তার উপর। অর্থাৎ-অ্যাডসেন্স,
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং বা অন্য পথে । অনেকেই
এইগুলো কে একসাথে ব্যবহার করে প্রচুর অর্থ উপার্জন করেন।
অধিকাংশ বাংলা ব্লগে প্রতি
মাসে ১০০/২০০ ডলার আয় হয়। অনেকেই আছেন মাসে
১০০০ ডলারের বেশিও আয় করতে পারেন ।
ইংরেজি ব্লগে আয়ের পরিমান বেশি হওয়ায় বাংলাদেশে বেশির ভাগ ব্লগার ইংরেজি ভাষায় ব্লগিং
করেন। ইংরেজি ব্লগ থেকে বেশীর ভাগ ব্লগার ৩০০/৫০০ ডলার আয় করেন । অনেক প্রো - ব্লগাররা একাধিক সাইটে ব্লগিংয়ের
মাধ্যমে মাসে, ১০০০০+ ডলার ইনকাম করছেন।
ব্লগ থেকে কীভাবে ইনকাম
হয়?
যারা ব্লগ তৈরি করি তাতে ভালো ভালো তথ্য শেয়ার করে, মানুষেরা ব্লগ থেকে সে তথ্য পড়তে আসেন, যাকে ট্রাফিক বা ভিজিটর বলা হয়। এই ভিজিটররাই আয়ের
উৎস। যে ব্লগে বা ওয়েবসাইটে যত বেশী ভিজিটর ক্লিক বা ভিজিট করবেন সে ব্লগে তত বেশি
ইনকাম।
বিশ্বের ৮০% এরও বেশি ব্লগাদের
আয়ের প্রধান উৎস হলো গুগল অ্যাডসেন্স ও advancement network. থেকে।আবেদন করলে Google AdSense ব্লগারদের ওয়েবসাইটে তার বিজ্ঞাপন
প্রচার করে। মানুষ যখন সেই বিজ্ঞাপনগুলিতে ক্লিক করে বা ওয়েবসাইট ভিজিট করে তখন
Google ব্লগারদের অর্থ প্রদান করে। যে যত বেশি
"ক্লিক" পাবেন সে তত বেশি উপার্জন করতে সক্ষম হবে।অর্থাৎ ব্লগের আয় নির্ভর করে তার ব্লগে ট্রাফিক বা ভিজিটরের
উপর।
ব্লগ ও ওয়েবসাইটের মধ্যে
পার্থক্য কি?
ব্লগ এবং ওয়েবসাইট এর পার্থক্য, হলো : -
১) ওয়েব সাইট আপডেট করা
হয় অনিয়মিত ভাবে।
২) অপরদিকে ব্লগ আপডেট
করা হয় নিয়মিত।
এমনকি কিছু কিছু ব্লগ প্রতি মিনিটেই আপডেট করা হয়। নির্দিষ্ট ওয়েব
সাইটে কোন বিষয়কে পাঠকদের মতামত পেশের জন্য তুলে ধরাকে ব্লগিং বলা হয়।
ব্লগিং এর বিষয় সমূহ
: -
ব্লগিং বিভিন্ন বিষয়ের উপর হতে পারে, যেমন: -
১) লাইফ স্টাইল
২) রাজনীতি
৩) সাহিত্য
৪) টেকনোলজি
৫) ভ্রমণ কাহিনী
জীবনের বিভিন্ন বিষয়ের উপর
লেখা একটি ডায়েরির মত যা সব কিছু গুছিয়ে রাখে। যার লেখা যত বেশি সমৃদ্ধ,তথ্য
প্রযুক্তি নির্ভর তার ব্লগে তত বেশি ভিজিটরের আগমন ঘটে।
ব্লগিং কেন করবেন?
উন্নত দেশ গুলোতে ব্লগিং করা
খুব জনপ্রিয় একটা পেশা। ব্লগিং নিয়ে তারা লেখাপড়া করে ও ইনকাম করে। উন্নত দেশগুলোতে
প্রায় সব শ্রেণীর পেশার মানুষই ব্লগিং এর সাথে জড়িত।
আবার অনেকে প্রধান ইনকাম সোর্স হিসেবেও ব্লগিং করেন।
ব্লগিং এর প্রকারভেদ :
-
ব্লগ প্রকারভেদে বিভিন্ন রকম হতে পারে। নিম্নতার বর্ণনা তুলে ধরা
হলো : -
১) নির্দিষ্ট বিষয়ের উপর ব্লগ: -
নির্দিষ্ট বিষয়ের উপরে ব্লগ সাধারণ বেশি দেখা যায়।
২) বিনোদন মূলক ব্লগ : -
অভিডি ও ভিডিও (গানের) ব্লগ, টেকিব্লগ, ফটো ব্লগ, আর্ট ব্লগ (মুভি
ও নাটকের ব্লগ) মানুষ সাধারণত এই ব্লগ গুলোর মাধ্যমে ইনকাম করে থাকে।
৩) ব্যক্তিগত ব্লগ : -
ব্যক্তিগত বিষয় সমূহ নিয়ে লেখালেখিবা নিজের জ্ঞানকে অন্যের কাছে
তুলে ধরার জন্য যে ব্লগ তৈরী করা হয় তাকে ব্যাক্তিগত ব্লগ বলে।
৪) সামাজিক ব্লগ : -
মানুষের আচার আচরণ, চলাফেরা,কৃষ্টি-কালচার ও সামাজের বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক কর্মকান্ড, নিয়ে তৈরী
ব্লগ গুলো কে সামাজিক ব্লগ বলে।
ব্লগিং করার কারণ ও ফলাফল
: -
১) নিজের অর্জিত জ্ঞান কে সকলের জন্য ছড়িয়ে দেওয়া।
২) তত্ত্ব ও তথ্য দিয়ে মানুষের উপকার করা।
৩) নিজের শখের বিষয়গুলো উপস্থাপন করে আনন্দ লাভ।
৪) সামাজিক সম্মান ও যোগাযোগের জন্য ব্লগিং করা।
৫) গুগল এডসেন্সের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করা।
বর্তমানে গুগল আডসেন্সের সুবাদে ৮০% ব্লগারই
ইনকামের জন্য ব্লগিং করে।
ব্লগিং কিভাবে শুরু করবেন?
১) নিজে শিখে শুরু করা
২) অভিজ্ঞ কারো সহযোগিতা নিয়েও করতে পারেন।
৩)ভাষা জ্ঞানটি অর্জন করুন।
৪) পরিচিত হয়ে উঠলে বিভিন্ন কোম্পানিও আপনার মাধ্যমে ব্লগিংয়ের
কাজ করাতে পারে।
৫) গুগলে কপিরাইট স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ। তাই কারো কন্টেন্ট
কপি করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
৬) ইংরেজিতে কনটেন্ট লিখতে পারলে সবচেয়ে ভালো এবং ভালো ইনকাম করা
যাবে।
৭) adsense আবেদনে হালাল এড দেয়ার ব্যাপারে স্ব-চেষ্ট হোন।
এফিলিয়েশনের মাধ্যমে আয় করা ও অনলাইনের জনপ্রিয়তার কারণে মানুষ ব্লগিং এর প্রতি খুব বেশি ঝুকে পড়ছে।
সর্বশেষ কথা : -
ব্লগিং একটি শক্তিশালী মিডিয়া বা গণমাধ্যম। যার সাহায্যে অনেক
অসম্ভবকে সম্ভব করা যায়। ব্লগিংয়ের ফলে প্রায় সকল দেশেরই সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক
সহ বিভিন্ন ব্যাপারে অভাবনীয় পরিবর্তন আসছে। ব্লগিংয়ের সঠিক প্রয়োগ সকলের জন্য সুফল
বয়ে আনবে এবং ব্যক্তি জীবনে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি গড়ে তুলবে।
কারো ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত না দিয়ে ভালো কনটেন্ট লিখুন, অনৈতিকভাবে
সফল হোন। আল্লাহ আমাদেরকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সঠিকভাবে ব্যবহার করার তৌফিক দিন
আমিন।
পোস্ট ট্যাগ -
মাসে ৫০ হাজার টাকা আয় করার উপায়, প্রতিদিন ১০০ টাকা আয়, প্রতি
সপ্তাহে 4000 টাকা পর্যন্ত আয় করুন, প্রতিদিন ৫০০ টাকা ইনকাম, কিভাবে ইনভেস্ট করব,
টাকা খাটানোর উপায়, টাকা বিনিয়োগ করার উপায়