Notification texts go here Contact Us Download Now!

গায়রত উম্মাহর হারানো আত্মমর্যাদাবোধ উদ্ধারের গুরুত্ব ও করণীয়।

আত্মমর্যাদার গুরুত্ব , আত্মমর্যাদা বৈশিষ্ট্য , আত্মমর্যাদা রচনা , আত্মমর্যাদা রক্ষার পদক্ষেপ , আত্মমর্যাদা কী , আত্মমর্যাদা বৃদ্ধির উপায় , আত্মমর্যাদ
Informative Desk
Please wait 0 seconds...
Scroll Down and click on Go to Link for destination
Congrats! Link is Generated
গায়রত উম্মাহর হারানো  আত্মমর্যাদাবোধ উদ্ধারের গুরুত্ব ও করণীয়।
গায়রত কাকে বলে?
গায়রত আরবি শব্দ, এর অর্থ আত্মমর্যাদাবোধ। আত্মমর্যাদা বোধকে আরবিতে ‘গায়রত’ বলে। গায়রত থাকা মুমিনের বৈশিষ্ট্য। সাহাবায়ে কেরাম তাদের স্ত্রী'র নাম পর্যন্ত পরপুরুষকে বলতেন না, এটাই গায়রত। একজন গায়রতহীন পুরুষ বড়ই ভয়ংকর।যারা স্ত্রী' ও কন্যাদের পর্দায় রাখেন না বা রাখতে পারেন না তারা নিজেদের কে ধ্বংস করছেন। এবং  সমাজ কে কলোশিত করছেন।


আল্লাহ তাআলার গায়রত: -
সর্বাধিক গায়রত রয়েছে আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের। বান্দা যখন আল্লাহর নিষিদ্ধ বিষয়ে লিপ্ত হয়, তখনই তাঁর গায়রত জাগে। আর এ কারণেই তিনি যেমন দয়ার সাগর, তেমনিভাবে তিনি সুকঠিন শাস্তিদাতাও।

গায়রতহীন নারী পুরুষ কারা?
যে নারী বেপর্দায় চলে, তার সৌন্দর্যের প্রতি অন্যদের লোলুপ দৃষ্টি পড়তে দেয়, যে পুরুষ তার স্ত্রী- কন্যাকে পর্দায় রাখেনা বরং  অন্য পুরুষকে দেখার সুযোগ দেয়।তাদের সাথে  বন্ধুত্ব করতে দেয় অথবা একইসঙ্গে সেলফি তুলে এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আপলোড করে, এরা সবাই গায়রতহীন।

কারা জান্নাতে যেতে পারবে না?
প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তিন শ্রেণির মানুষের ওপর আল্লাহর জান্নাত হারাম অর্থাৎ এই তিন শ্রেণির মানুষ কখনোই জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না। তারা কখনো জান্নাতের স্বাদ পাবে না।

এ তিন শ্রেণির লোক হলো: -

১) দাইয়্যুস: -

দাইয়্যুস হলো ওই ব্যক্তি,যে তার পরিবারে পর্দা প্রথা চালু করেনি। পরিবারের লোকজন বেপর্দায় চলতো, বেহায়াপনায় লিপ্ত ছিল, কিন্ত সে তার কোনো প্রতিরোধ করেনি বা বাধা প্রদান করেনি। পরিবারের কর্তা হিসেবে বেপর্দা-বেহায়াপনা বন্ধ না করার জন্য এই শাস্তি পাবে সে।

দাইয়ুসের পরিচয়: -

الذي لا يبالي من دخل على أهله

এমন ব্যক্তি, যে তার স্ত্রীর কাছে কে প্রবেশ করল, এর পরোয়া করে না।

২) অবাধ্য সন্তান: -
যারা পিতা-মাতার অবাধ্য। পিতা-মাতার অবাধ্য সন্তানও জান্নাতে যাবে না।

৩) নেশাকারী: -
যারা নেশাগ্রস্ত এবং মাদক-দ্রব্য পান করে বা গ্রহণ করে তারা জান্নাতে যেতে পারবে না । ইসলামে নেশাকে হারাম করা হয়েছে।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর সব জ্ঞানবান কিশোর যুবক, বয়স্ক নারী-পুরুষ সকল কে উল্লেখিত নিষিদ্ধ তিন কাজ থেকে বিরত থাকার তাওফিক দান করুন।আমীন।

অহংকার ও আত্মমর্যাদাবোধের মধ্যে পার্থক্য কী?
আত্মমর্যাদাবোধকে আরবিতে ‘গায়রত’ বলে। গায়রত থাকা মুমিনের বৈশিষ। গায়রতের উৎস হলো দীন। আর অহংকার থাকা কাফিরের বৈশিষ্ট্য। অহংকারের উৎস হলো নফস।কখনো কখনো গায়রত শিরোনামে অহংকারেরও চর্চা হয়। গায়রতের উৎস হলো দীন।

এখন কারও আত্মমর্যাদাবোধের উৎস দীন না হয়ে যদি অন্য কিছু হয়,যেমন নফস, তাহলে তা-ই অহংকার ও জাহিলিয়্যাত। রাসুলুল্লাহ সা. বলেন :

من الغيرة ما يحب الله، ومنها ما يبغضه الله

কিছু গায়রত এমন, যা আল্লাহ ভালোবাসেন। আর কিছু গায়রত এমন, যা আল্লাহ ঘৃণা করেন।

দীনি গায়রতের অংশ কী কী?
 ইমানি গায়রত ও ইলমি গায়রত হলো দীনি গায়রতের অংশ। ইমানি গায়রতের অর্থ হলো, ইমানের কারণে ব্যক্তির আত্মমর্যাদাবোধ জেগে ওঠা।

কেউ আল্লাহ ও তাঁর রাসুল (সা.) অথবা সাহাবিদের  গালি দিলে ভেতরে যদি আত্মমর্যাদাবোধ না জাগে, তাহলে বুঝতে হবে সেই ব্যক্তি ইমানি গায়রতহীন।

একই ভাবে কোন ব্যক্তির সামনে যদি দীনের অপব্যাখ্যা হওয়া সত্ত্বেও সে যদি মুখে কুলুপ এঁটে রাখে, তবে সেই ব্যাক্তি ও ইলমি গায়রতহীন।


বর্তমানে গায়রতের চিত্র :  -
একজন গায়রতহীন পুরুষ বড়ই ভয়ংকর। এখনকার সময়ের পুরুষদের গায়রত থাকতো তো দূরের কথা বরং তারা নিজেদের স্ত্রীর বেপর্দা ছবি ফেসবুকে আপলোড দেয়! আবার বলে এটাই নাকি এখনকার ভদ্র সমাজের ট্রেন্ড! আসতাগফিরুল্লাহ! আল্লাহুম্মাগফিরলানা।

স্বামীর গাইরাত বলতে কী বুঝায়?
স্ত্রী যখন নিজের রূপ-লাবন্য, সৌন্দর্য অন্যকারো সামনে প্রকাশ করে অথবা স্বামীকে বাদ দিয়ে অন্য কোনো পুরুষের দিকে ঝুঁকে পড়ে, স্ত্রী পরকীয়ায় লিপ্ত হয়  তখন স্বামীর ভেতর যে আত্নসন্মানবোধ ( উত্তেজনা) তৈরি হয় তাকেই গায়রত বলে।

রাসূল (সা.) এর আত্মসম্মানবোধ কেমন ছিলো?
নবী করিম (সা.) একদিন সাহাবায়ে কেরামের সামনে ব্যভিচারের শাস্তির জন্য সাক্ষ্য-প্রমাণের বিষয়টি আলোচনা করেন। হজরত সাদ ইবনে উবাদা (রা.) তখন বলেন, কাউকে আমার স্ত্রীর সঙ্গে ব্যভিচারে পেলে আমি সাক্ষী খুঁজতে যাবো না বরং আমি তাকে তলোয়ারের ধারালো অংশ দিয়ে আঘাত করবো।

রাসূল (সা.) বলেন, ‘তোমরা সাদের আত্মসম্মানবোধ দেখে আশ্চর্য হচ্ছো? আল্লাহর কসম, আমি তার চেয়ে বেশি আত্মসম্মানবোধ সম্পন্ন এবং আল্লাহ তায়ালা আমার চেয়ে বেশি।’ (সহিহ মুসলিম, কিতাবুল লিয়ান, হাদিস নম্বর: ৬৩৪০)।

মিসরের বাদশা মুকাওয়াকিস, রাসূলুল্লাহ (সা.) এর দাওয়াতি পত্রের মাধ্যমে ইসলাম গ্রহণ করেন। হাদিয়া হিসেবে তিনি রাসূল (সা.) এর জন্য একজন দাসী পাঠান। তার নাম ছিলো মারিয়া।আল্লাহর  রাসূলের (সা.) সন্তান ইব্রাহিম (রা.) মারিয়ার গর্ভে  জন্ম নেন। মারিয়ার  সঙ্গে একজন পুরুষও মিসর থেকে এসেছিলো। সে মারিয়ার ঘরে যাতায়াত করতো।

একদিন রাসূলুল্লাহ (সা.) তার ঘরে প্রবেশ করে মারিয়ার পাশে লোকটি কে বসা  দেখে রাসূলের (সা.) আত্মসম্মানে আঘাত লাগে। চেহারার রং পাল্টে যায়। তিনি বের হয়ে আসলে রাস্তায় হজরত ওমর (রা.) এর সঙ্গে সাক্ষাত হয়। হজরত ওমর (রা.) রাসূলুল্লাহ (সা.) এর এই অবস্থা দেখে তলোয়ার নিয়ে ঐ ব্যক্তিকে হত্যা করতে যান।

তখন হজরত জিবরাইল (আ.) এসে মারিয়া ও তার পাশে বসা ব্যক্তিটির পবিত্রতার সংবাদ দেন। এভাবে সে বেঁচে যায়। (রাওজাতুল মুহিব্বিন, খণ্ড-১, পৃষ্ঠা-২৯৪)।

রাসূল (সা.) আমাদের জন্য আদর্শ। তার প্রত্যেকটি কাজ, ওঠা-বসা, আচার-ব্যবহার অনুসরণীয়। তিনি নরম স্বভাবের ব্যক্তি হওয়া সত্তেও, নিজের দাসীর সঙ্গেও অন্য পুরুষের ওঠা-বসাকে মেনে নিতে পারেননি। বরং তিনি তাকে হত্যার অনুমতি দিয়েছিলেন। তাহলে আমরা কীভাবে নিজের স্ত্রীকে অন্য পুরুষের সঙ্গে হাশি-তামাশার সুযোগ  দিতে পারি?

হজরত ওমর (রা.) এর আত্মসম্মানবোধ কেমন ছিল?
সাইয়েদেনা  ওমর (রা.) ছিলেন  অন্যায়ের ব্যাপারে কঠোর। হজরত নবী করিম (সা.) বলেন, ‘একদিন স্বপ্নে আমি জান্নাতে  অনেক সুন্দর একটা অট্রালিকা দেখতে পাই। তার পাশে বসে একজন নারী অজু করছিলেন। আমি তাকে জিজ্ঞেস করি, এই অট্টালিকাটা কার জন্য? জবাবে জানানো হলো, হজরত ওমরের জন্য। তখন আমার মন চাচ্ছিলো একটু ঘুরে দেখি। কিন্তু হজরত ওমরের আত্মসম্মানবোধ চিন্তা করে আমি বিরত থাকি।’ হজরত ওমর (রা.) রাসূল (সা.) থেকে এই ঘটনা শুনে কেঁদে ফেলেন এবং বলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আপনার ব্যাপারে আমার আত্মসম্মানবোধ জেগে ওঠবে! (সহিহ বুখারি, কিতাবু বাদয়িল খালক, হাদিস নম্বর-৪৪০৮)।
উক্ত হাদিসের শিক্ষা : - বড়দের দায়িত্ব  ছোটদের আত্মসম্মানের প্রতি খেয়াল রেখে পদক্ষেপ নেয়া। কখনো এমন পদক্ষেপ নেয়া উচিত হবে না, যা দ্বারা ছোটদের আত্মসম্মানে আঘাত লাগে।

নিষিদ্ধ গায়রত বা আত্নসন্মানবোধ কী?
বাবার দ্বিতীয় বিয়ে  অথবা  বিধবা মায়ের নতুন স্বামীর সংসার করা কিংবা  স্বামী দ্বীনি প্রয়োজনে চারিত্রিক পরিশুদ্ধি রক্ষার্থে দ্বিতীয়াকে ঘরে আনা যদি কেউ  ইগোর অজুহাত দিয়ে বাঁধা দেন  তবে এটাই হলো নিষিদ্ধ গায়রত বা আত্নসন্মানবোধ।

কারণ, আল্লাহ যা বৈধ করেছেন, সে ব্যাপারে আপনার নেতিবাচক মানসিকতা পোষন  করার কোনোই অধিকার নেই। শরিয়াহর কোনো বিধানের ব্যাপারে অন্তরে সামান্য অপছন্দনীয়তা থাকলেও ব্যক্তির ইমান থাকতে পারে না।

গায়রতের বর্তমান হাল কী?
আধুনিক আইয়্যামে জাহেলিয়াতের প্রচলিত সমাজে পুরুষদের থেকে গায়রত হারিয়ে যাওয়ায় নারীদের থেকেও পবিত্রতা বিলুপ্ত হয়েছে। বাবা, ভাই ও স্বামী দাইয়ুস হয়ে যাওয়ার কারণে  নারীদের সম্ভ্রমও পানির মতো সস্তা হয়ে পড়েছে।

কথিত আছে : -
"যে জাতির পুরুষদের ভেতরে গায়রত থাকে, সে জাতির নারীদের ভেতরেও পবিত্রতা থাকে"। 

ইবনুল কায়্যিম রহ. বলেন : -
"দীনের মূল হলো গায়রত। যার গায়রত নেই, তার দ্বীন নেই"।

গায়রত অন্তরকে সুরক্ষিত রাখে, ফলে অঙ্গগুলোও সুরক্ষিত থাকে। আর তা অশ্লীলতা ও নোংরামি দূরে রাখে। গায়রতহীনতা অন্তর মেরে ফেলে। ফলে অঙ্গগুলোও মৃত্যুবরণ করে।

আধুনিক আইয়ামে জাহেলিয়াতের সকল নোংরামি থেকে আল্লাহ জাতিকে হেফাজত করুন আমিন।

আসুন আল্লাহকে ভয় করি, মৃত্যুকে স্মরণ রেখে পথ চলি... সুন্নতি জীবন গড়ি।

Knowledge of the Qur'an is essential

পোস্ট ট্যাগ -
আত্মমর্যাদার গুরুত্ব , আত্মমর্যাদা বৈশিষ্ট্য , আত্মমর্যাদা রচনা , আত্মমর্যাদা রক্ষার পদক্ষেপ , আত্মমর্যাদা কী , আত্মমর্যাদা বৃদ্ধির উপায় , আত্মমর্যাদা নিয়ে উক্তি

إرسال تعليق

Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.
AdBlock Detected!
We have detected that you are using adblocking plugin in your browser.
The revenue we earn by the advertisements is used to manage this website, we request you to whitelist our website in your adblocking plugin.
Site is Blocked
Sorry! This site is not available in your country.