GPS প্রযুক্তি স্বাচ্ছন্দ্যময়
জীবনের প্রতিফলন - বিশ্বজনীন অবস্থান-নির্ণায়ক ব্যবস্থা GPS.-Global Positioning
System (গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম) একটি কৃত্রিম উপগ্রহভিত্তিক যোগাযোগ ব্যবস্থা। সংক্ষেপে
এটাকে GPS (জিপিএস) বলা হয়।
এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক উদ্ভাবিত একটি
প্রযুক্তি। স্মার্টফোনে থাকা গুগল ম্যাপ ব্যবহার করে অচেনা জায়গার বা রাস্তার সার্বিক
তথ্য জানা যায় এ প্রযুক্তির মাধ্যমে ।
জিপিএস কাকে বলে?
GPS.- (জিপিএস) এর পূর্ণরুপ হলো Global Positioning System (গ্লোবাল
পজিশনিং সিস্টেম)
বর্তমানে স্মার্টফোন ব্যবহার কারী প্রতিটি মানুষই জিপিএস
(GPS.)এর নাম শুনে থাকবে ।
GPS.(জিপিএস) Global positioning system হলো গ্লোবাল ন্যাভিগেশন
স্যাটেলাইট সিস্টেম, যার মাধ্যমে আমরা আমাদের বর্তমান অবস্থানের বিষয়ে জানতে পারি।মোট
কথা হলো যে ডিভাইসের মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যবহার করে কোনো স্থান, রাস্তাঘাটের অবস্থান
সম্পর্কে জানা যায় তাকে জিপিএস বলে।
জিপিএস এর উপাদান : -
জিপিএস GPS. এর তিনটি অংশ বা উপাদান রয়েছে।
প্রধান গুলো হল: -
১) স্পেস সেগমেন্ট
২) কন্ট্রোল সেগমেন্ট এবং
৩) রিসিভার।
এই উপাদান গুলো একত্রে কাজ করে যাতে অবস্থান নেভিগেশন ও সময় সম্পর্কিত
তথ্যসমূহ সঠিক ভাবে নির্ধারণ করা যায়।
জি পি এস(GPS) এর প্রকারভেদ :-
১) Assisted GPS
2) Simultaneous GPS
3) Differential GPS
4) Non-differential GPS
5) Mapping and non-mapping GPS
জিপিএস (GPS.)এর ইতিহাস: -
১৯৭০-এর দশকের শুরুর দিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়
কর্তৃক উদ্ভাবিত হয় এ GPS.(জিপিএস) প্রযুক্তি।
প্রথম দিকে এর প্রয়োগ পুরোপুরি সামরিক ছিল । পরে জনসাধারণের জন্য এর ব্যবহার উন্মুক্ত করা হয়।
এটি হলো একটি কৃত্রিম উপগ্রহভিত্তিক যোগাযোগ ব্যবস্থা। যে কোন আবহাওয়াতে
পৃথিবীর চলমান অবস্থান ও সময়ের তথ্য সরবরাহ করাটা এর মূল কাজ। জিপিএস এর মাধ্যমে ব্যবহারকারীগণ উপগ্রহ প্রেরিত সঙ্কেত গ্রহণ করতে পারে।
১৯৮৩ সালের পরে U.S Government এর নির্দেশ অনুযায়ী GPS.(জিপিএস)
প্রযুক্তিকে জনসাধারণের ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত করা হয় হয়।
জিপিএস কিভাবে কাজ করে?
জিপিএস উপগ্রহ এর মাধ্যমে কাজ করে, কিন্ত কিভাবে কাজ করে? সেটা
হলো মহাআকাশে যে উপগ্রহ পাঠানো হয় তার মাধ্যমে আমাদের সিগন্যাল পাঠায়।
সে সিগনাল ব্যবহার করে আমরা সঠিক স্থান সম্পর্কে জানতে পারি। আমাদের
কাছে থাকা জিপিএস ডিভাইস থেকে সিগন্যাল পাঠায় উপগ্রহের কাছে, তখন উপগ্রহ আমাদের পাঠানো
সে সিগন্যাল বুঝে তথ্য পাঠায় আমাদের ডিভাইসে।
এ জিপিএস (GPS) বর্তমানে অনেক জিনিসেই ব্যবহার করা হয়। যেমন:-স্মার্টফোন,
ঘড়ি, বাইক, ঘর, গাড়ি ইত্যাদি। এটা মূলত কাজ করে trilateration নামক একটি প্রযুক্তির
সাহায্যে।
এই trilateration প্রযুক্তির মাধ্যমে বিভিন্ন সিগনাল (signal) গুলোকে satellite এর মাধ্যমে গ্রহন করে নেয়। যার ফলে আমরা সহজেই সে লোকেশনের তথ্য খুঁজে পাই।
জিপিএস (GPS) কি কি কাজে ব্যবহার হয়?
বর্তমান দুনিয়ায় বিভিন্ন
কাজে GPS(জিপিএস) ব্যবহার করা হয়। নিন্মাতার
কয়েকটি কাজ তুলে ধরা হলো : -
১) Tracking – যেকোনো পাসোনাল মুভমেন্ট পরিক্ষা নিরক্ষা করার জন্য।
২) Mapping – সমস্ত দুনিয়ার ম্যাপ তৈরি করার কাজে।
৩) Location – একটি অবস্থানকে নির্ধারণ করার জন্য ।
৪) Navigation – একটি স্থান থেকে আর একটি অবস্থানে নিয়ে যাওয়ার
জন্য।
৫) Timing – সময়ের সঠিক ম্যাপ করে নেওয়ার জন্য ।
এ ছাড়াও প্রযুক্তির সাথে সাথে বর্তমানে জিপিএসের ব্যবহার প্রচুর
পরিমানে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ জিপিএস (GPS) বর্তমানে অনেক জিনিসেই ব্যবহার করা হয়। যেমন:-স্মার্টফোন,
ঘড়ি, বাইক, ঘর, গাড়ি ইত্যাদি। এটা মূলত কাজ করে trilateration নামক একটি প্রযুক্তির
সাহায্যে।
এই trilateration প্রযুক্তির মাধ্যমে বিভিন্ন সিগনাল (signal) গুলোকে satellite এর মাধ্যমে গ্রহন করে নেয়। যার ফলে আমরা সহজেই সে লোকেশনের তথ্য খুঁজে পাই।
তাছাড়া, আমরা লোকেশনের সাথে জিপিএস এর মাধ্যমে গতি-বেগ ও সময়ের
সিস্ক্রোনাইজেশনের বিষয়ে জানতে পারি। GPS স্যাটেলাইট এর মাধ্যমে পৃথিবীর যেকোনো স্থান,
ঠিকানা, রাস্তা দেখিয়ে দিতে পারে।
আর এই সিগনাল ব্যবহার করে আমরা সঠিক স্থান সম্পর্কে জানতে পারি।
আমাদের কাছে থাকা জিপিএস ডিভাইস থেকে সিগন্যাল পাঠায় উপগ্রহের কাছে, আর উপগ্রহ আমাদের পাঠানো সেই সিগন্যাল
বুঝে তথ্য পাঠায় আমাদের ডিভাইসে।
জিপিএস (GPS.)এর বৈশিষ্ট্য:-
১) যেকোনো প্রাকিতিক দূর্যোগের সময় responder গুলো প্রথমে জিপিএস
ব্যবহার করে। কারণ, জিপিএস এর মাধ্যমে আবহাওয়ার পূর্বভাস করা সম্ভব।
২) জিপিএস ব্যবহার করে
যেকোনো জিনিসের উপর নজর রাখা যায়। এই জিনিসটা কোথায় যাচ্ছে এই বিষয়ে তথ্য পাওয়া
যায়।
৩) GPS প্রযুক্তি ব্যবহার করে যেকোনো জায়গার রাস্তা, হোটেল, জায়গা
ইত্যাদি খুব সহজে খুঁজে বের করা যায়। তাছাড়া এর সাহায্যে নিদিষ্ট গন্তব্য পৌঁছানো যায়।
৪) শারীরিক কার্যকলাপেও এ গুলোকে ট্র্যাকিং এর কাজে ব্যবহার করা
যায় । যেমন- দিনে কত মিটার হাঁটা হলো,কত সময় দাঁড়ালো এবং কত সময় দৌড়ালো ইত্যাদি।
৫) বাইক (bike), ক্যার (car) এ জিপিএস ডিভাইস ব্যবহার করে চুরির
হাত থেকে রক্ষা করা যায়। গাড়িতে যদি এই ডিভাইন
লাগানো থাকে তাহালে, গাড়ি চুরি হলেও গাড়ি কোন লোকেশনে আছে সেটা সনাক্ত করা যায় ।
৬) বর্তমানে জিপিএস(GPS)গুলো
হাতে থাকা এন্ড্রয়েড স্মার্টফোন, ঘড়ি, পিসি গেমস এ ব্যবহার করা হচ্ছে। ফলে অনেক সহজেই এ গুলোকে ব্যবহার করা যায়।
জিপিএস ট্রাকার কি? (what is GPS tracker?): -
জিপিএস ট্রাকার বা জিপিএস ট্র্যাকিং হলো একটি navigation device যা ব্যবহার করে গাড়ি, পশু ও মানুষ
ইত্যাদি চলন্ত জিনিসের উপর নজর রাখা যায়। । এরপরে Global positioning system এর মাধ্যমে
ডিভাইসটির লোকেশন বের করা হয়।
জিপিএস(GPS.)এর সুবিধা সমূহ: -
জিপিএস ব্যবহারের কিছু উল্লেখযোগ্য সুবিধা হল: -
১) জিপিএস রোদ,বৃষ্টি বা
ঝড় যে কোন আবহাওয়ায় কাজ করতে সক্ষম।
২) জিপিএস এর দাম অন্যান্য নেভিগেশন সিস্টেমের তুলনায় অনেক কম
এবং এর ব্যবহারও খুব সহজ। আমাদের হাতে থাকা স্মার্টফোন বা স্মার্টওয়াচ দিয়েই এটি
ব্যবহার করা যায়।
৩) বিশ্বের যে কোন প্রান্ত
থেকেই জিপিএস ব্যবহার করা সম্ভব।
৪) জিপিএস এর মাধ্যমে লাইভ ট্রাফিক আপডেট পাওয়া যায়। ট্রাফিক
আপডেট দেখে রাস্তায় চলাচল করলে আমাদের সময় অপচয় কম হবে।
৫) জিপিএস এর সাহায্যে যেকোনো নির্দিষ্ট জায়গার আশেপাশের এটি এম
বুথ,হোটেল, রেস্টুরেন্ট, ব্যাংক, হসপিটাল ইত্যাদির লোকেশন দেখতে পাওয়া যায়।
৬) জিপিএস এর মাধ্যমে রিয়েল
টাইম ট্রাকিং এবং লাইভ স্ট্রিমিং ভিডিও রেকর্ডিং করা যায়।
জিপিএস এর সীমাবদ্ধতা : -
সারা বিশ্ব জুড়ে জিপিএস ব্যবহৃত হলেও এর কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে।
যেমন: -
১) জিপিএস সিগনাল অনেক সময় বড় পাহাড় বা পুরো দেয়াল ভেদ করতে
পারে না ফলে সে সকল জায়গার জিপিএস সিগন্যাল ভালো কভারেস দিতে পারেনা।
২) জিপিএস ব্যবহার করার জন্য একটি ডিভাইস ও ইন্টারনেট থাকা আবশ্যক।
এগুলো ছাড়া জিপিএস সিগন্যাল ব্যবহার করে লোকেশন ট্র্যাক করা সম্ভব হয় না।
৩) পাহাড়ি ও বরফে আবৃত এলাকায় জিপিএস ঠিকমতো কাজ করে না। এসব
জায়গায় জিপিএস সিগন্যাল পেতে বেশ ভোগান্তিতে পড়তে হয়।
উপসংহার: -
GPS ডিভাইস ব্যবহারের ফলে আমরা আমাদের বাইক সহ অন্যান্য গাড়ি গুলো
কোথায় চলাচল করছে সেটা সহজে দেখতে পারি। তাছাড়া, এটাকে অনেক ক্ষেত্রে পশু, পাখির উপর
নজর রাখার ক্ষেত্রেও ব্যবহার করা হয়।
GPS আবিস্কার মানব জীবনে একটি বিশেষ ভূমিকা রাখছে। এ জিপিএস প্রযুক্তি ব্যবহার করে আমরা
বিভিন্ন অচেনা রাস্তা বা ঠিকানা খুঁজে বের করছি।
জিপিএস এর মাধ্যমে আমরা কোন জায়গার দূরত্ব কত? কোথায় আছে? গাড়ি,
বাড়ি, ব্যাক্তি সহ চলন্ত জিনিসের অবস্থান ও (location) দেখতে পারি।
পোস্ট ট্যাগ -
জিপিএস এর পুরো নাম কি, জিপিএস এর সুবিধা গুলো কি কি, জিপিএস এর
বিভিন্ন অংশের নাম, জিপিএস এর ব্যবহার, Gps এর সুবিধা ও অসুবিধা, জিপিএস এর বৈশিষ্ট্য,
জিপিএস সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা কর, জিপিএস কিভাবে চালু করতে হয়