আধুনিক প্রযুক্তির ছোঁয়ায় বিশ্ব এখন হাতের মুঠোয়। প্রযুক্তি মানুষকে উন্নতি ও আকাশ ছোঁয়া সাফল্যের সাথে সভ্যতা ধ্বংসের হাতছানি ও দেয়। প্রযুক্তি বিজ্ঞানের
আবিষ্কার। প্রযুক্তি মানুষের জন্য মহান আল্লাহ তায়ালার বিশেষ নেয়ামত। যুগে যুগে নবী
ও রাসূলগণ তাদের যুগে সেরা প্রযুক্তির ব্যবহার করেছেন। কাজেই প্রযুক্তি ইসলাম ও মুসলমানসহ
সমগ্র মানবজাতির জন্য কল্যাণকর।
চমকপ্রদ প্রযুক্তি আসছে
বিজ্ঞানের অভিনব কিছু আবিষ্কার নিয়ে।
নিন্মে তার এক ঝলক -
বিশ্বজুড়ে ‘ওয়াইফাই’ :
-
এশিয়া, আফ্রিকা, এমনকি ইউরোপের ৫০ শতাংশ প্রত্যন্ত অঞ্চলে ইন্টারনেট
সেবা এখনো পৌঁছায়নি। ভার্র্জিন গ্রুপের ‘ওয়ান ওয়েব’ নামের প্রতিষ্ঠানটি
১০ বছরের মধ্যে সমগ্র পৃথিবীকে ‘ওয়াইফাই’-এর আওতায় নিয়ে আসার জন্য কাজ করছে
।কোম্পানিটি ২০১৮ সালেই ১০টি স্যাটেলাইট নিক্ষেপ
করছে। ২০২৭ সালের মধ্যে পৃথিবী ঘিরে রাখবে ‘ওয়ান ওয়েব’-এর ৯০০ স্যাটেলাইট। মরুভূমি,সাগর,
পাহাড়ের চূড়া, গিরিপথ সহ পৃথিবীর প্রতিটি প্রান্তরে পৌঁছে যাবে ‘ওয়াই ফাই’।, ইন্টারনেট নিয়ে কাউকে
সমস্যায় পড়তে হবে না কোথাও।
ক্যান্সার শনাক্ত করবে
গুগল : -
গুগল এক্স ল্যাবরেটরিতে
চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা ন্যানো-টেকনোলজি ও মেডিসিনে চমৎকার সব আবিষ্কার করেছেন। গুগলের রিসার্চ
ল্যাব ক্যান্সার শনাক্তকারী পিল আবিস্কার করতে সক্ষম হয়েছে। প্রাথমিক পর্যায়ে ক্যান্সার
শনাক্ত করে ক্যান্সার প্রতিরোধ ও মৃত্যুঝুঁকি কমাতে গুগলের এ পিল অসাধারণ ভূমিকা পালন করবে বলে সবার
প্রত্যাশা।
মাথা প্রতিস্থাপন : -
বৃদ্ধ বয়সে বুড়িয়ে যাওয়া শরীর থেকে মাথা আলাদা করে আরেকটি তরুণ
শরীরে বসিয়ে যুগ যুগ ধরে মানুষ বেঁচে থাকবে।শুনতে কল্পবিজ্ঞানের কোনো গল্প মনে হলেও
ডক্টর ক্যানাভেরোর মতে, এমন কিছুই ঘটতে চলেছে
ভবিষ্যতে।
পৃথিবী জুড়ে সেরা বিজ্ঞানী-গবেষক ও ডাক্তাররা নিরলস সাধনা করছেন,
'প্যারালাইসিসের নিরাময়' আবিষ্কারের জন্য। প্যারালাইসিসের মূল কারণ মেরুদণ্ডের মাঝের
স্পাইনাল কর্ডে আঘাত পাওয়া। স্পাইনাল কর্ডের
কাজ, সুরক্ষা কিংবা আহত কর্ড সারিয়ে তোলার গবেষনা চলে আসছে বহু দিন ধরে। সম্প্রতি
চিকিৎসা বিজ্ঞানী ড. ক্যানাভেরোর স্পাইনাল কর্ড কেটে মেরামত করে চুম্বক আবেশের
সাহায্যে জোড়া দিয়ে চীনে মৃতদেহের ওপর এ অস্ত্রোপচার করে সফল হয়েছেন।
এখন জ্যান্ত মানুষের ওপর পরীক্ষা করে দেখার বাকি! অনেকের মতে, তার
এই আবিষ্কার প্রকৃতির শৃঙ্খলা ধ্বংস করে ফেলবে, ডেকে আনবে বিপর্যয়। কারণ অসম্ভব বিত্তবান মানুষগুলো ইচ্ছামতো শরীর বদলে ফেলতে পারবেন।
ত্বকে মিশে যাবে প্রযুক্তি
: -
স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের প্রফেসর
জিনান বাও ও তার দল সম্প্রতি পৃথিবীর প্রথম ইলেকট্রনিক বায়োপলিমার আবিষ্কার করেছেন।
যা ব্যবহার করলে ত্বকে মিশে যাবে। এক দিন হয়তো কোনো স্মার্টফোন বা কম্পিউটার ছাড়াই
ত্বকে প্রযুক্তিগত কাজগুলো সেরে ফেলা সম্ভব
হবে। অসম্ভব পাতলা ওজনহীন এবং শরীরের জন্য ক্ষতিকর নয়- এই প্রযুক্তি। গবেষকরা আশা করছেন
এর মাধ্যমে মানবদেহের অজানা রহস্য উদঘাটন হবে।
পানি থেকে জ্বালানি :
-
গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা হাইড্রোজেন জ্বালানি প্রস্তুত করার ব্যাপক সোরগোল
শুরু করেছেন। ‘সায়েন্স’ জার্নালে প্রকাশিত এক প্রবন্ধে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের
অধ্যাপক লিক্রনিন জানিয়েছেন,'হাইড্রোজেনকে এক বিশেষ তরল পদার্থের সাহায্যে অজৈব জ্বালানি
হিসেবে ব্যবহার করা যাবে'।এতে বিদ্যুৎ বা এনার্জি খরচ হবে না, বরং সূর্য আর বাতাস থেকে
যে শক্তি তৈরি হয়, তা দিয়েই হাইড্রোজেন জ্বালানি তৈরি করা সম্ভব।
রোবোটিক হাত :-
অক্টোপাস বৈজ্ঞানিক গবেষণায়
ও অনুপ্রেরণায় ব্যবহার করা হয়। এ যুগের সেরা
আবিষ্কার ‘সাকশন কাপ’ ও 'আট পা ওয়ালা
আন্ডার ওয়াটার রোবট'- অক্টোপাসকে অনুসরণ করে তৈরি করা হয়েছে। সম্প্রতি অক্টোপাসের আটটি
শুঁড়ের অবলন্বনে এমআইটির দারবেলোফ ল্যাবরেটরি পরিধান যোগ্য রোবোটিক হাতের মডেল তৈরি
করেছে। নিজের হাতের গতির সাথে মিল রেখে বিপজ্জনক কাজে এ হাত ব্যবহার করা যাবে নিজের হাত ব্যবহার না করেও।
সত্যিকারের টেলিপ্যাথি
: -
মস্তিষ্ক নিয়ে বৈজ্ঞানিক গবেষণা এখন বেশ এগিয়ে। ফ্রান্স, যুক্তরাষ্ট্র
ও স্পেনের বিজ্ঞানীরা এরই মধ্যে বিশ্বের প্রথম
‘টেলিপ্যাথি’ যোগাযোগ করতে সফল হয়েছেন। ইলেকট্রো এনসিফেলোগ্রাম নামক এক প্রযুক্তির
মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যবহার করে কোনো কথা বা
ইঙ্গিত ছাড়াই দু'দেশে অবস্থান কারী ২ জন বিজ্ঞানী
দু’টি মস্তিষ্কের মধ্যে কিছু শব্দ আদান-প্রদান করেছেন, যা এ সময়ের সবচেয়ে চাঞ্চল্যকর
স্নায়ুবিজ্ঞান গবেষণা হিসেবে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।
বায়োনিক ব্রেন : -
আরএমআইটির(RMIT) বিজ্ঞানীরা মস্তিষ্কের মেমোরি (স্মৃতি) কোষকে অনুসরণ
করে আরো শক্তিশালী মেমোরি যন্ত্র আবিষ্কার করেছেন।এ অত্যাধুনিক যন্ত্রটি আকারে ক্ষুদ্র
এবং স্বাভাবিকের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি গতিসম্পন্ন।
পুরোপুরি মস্তিষ্কের সিগন্যাল সিস্টেম অনুকরণ করে যেকোনো যন্ত্রকে
‘বায়োনিক ব্রেন’-এর কাছাকাছি নিয়ে আসা সম্ভব হবে। আর এ আবিষ্কার সেই সুদূর প্রসারী
যাত্রার মাইলফলক।
পৃথিবীসদৃশ ৭টি গ্রহের
সন্ধান : -
পৃথিবীর মতো সাতটি নতুন
গ্রহ আবিষ্কারের ঘোষণা দিয়েছে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। পৃথিবীর ছায়াপথে
একটি ছোট নক্ষত্রের চার পাশে ঘুরতে থাকা সাতটি পৃথিবীসদৃশ গ্রহের সন্ধান পেয়েছেন নাসার
বিজ্ঞানীরা। বিজ্ঞানীদের এই নতুন আবিষ্কার সম্প্রতি জার্নাল নেচারে প্রকাশ করা হয়েছে।
ওয়াশিংটনের নাসার সদর
দফতর থেকে সংবাদ সম্মেলনে নতুন এ গ্রহ আবিষ্কারের
ঘোষণা দেয়া হয়েছে। সাতটি গ্রহের আকারও প্রায় পৃথিবীর মতোই। বিজ্ঞানীদের দাবী এর ৩ টির
মধ্যে প্রাণ বিকাশে সহায়তা কারী মহাসাগর থাকার উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে। পৃথিবী থেকে
প্রায় ৪০ আলোকবর্ষ দূরের এর অবস্থান। গবেষক দলের প্রধান বেলজিয়ামের লিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের
জ্যোতির্বিদ মাইকেল গালোন নতুন এই আবিষ্কার সম্পর্কে বলেন, ‘একটি নক্ষত্রকে ঘিরে এতগুলো
গ্রহের সন্ধান পাওয়া গেছে এ প্রথম বার। গ্রহগুলোর মধ্যবর্তী স্থানে রয়েছে মাত্র ১টি নক্ষত্র। এর নাম করণ হয়েছে ট্রাপিস্ট-১।
সেখানে পানি ও প্রাণের সন্ধান মিলতে পারে বলে বিজ্ঞানীরা অনুমান করছেন।
সার কথা : -
মানব জীবনে সুখ, শান্তি,
সমৃদ্ধি ও স্বাচ্ছন্দ্য আনোয়নে বিজ্ঞানের আবিষ্কারের প্রভাব রয়েছে। মানুষ তার যুগ
- যুগান্তরের স্বপ্ন ও সাধনার ফসল দিয়ে সভ্যতার
এ বিশাল ইমারত গড়েছে। সভ্যতা গড়ার মূলে রয়েছে মানুষের বাহুর শক্তি, মস্তিষ্কের বুদ্ধি, ইন্দ্রিয়ের অনুভূতি
ও হৃদয়ের ভালোবাসা। বিজ্ঞান মানুষ কে দেয়া মহান রবের উপহার জ্ঞান -সাধনার ফসল।
পোস্ট ট্যাগ -
গ্যালিলিও গ্যালিলি আবিষ্কার করেন, মহাবিশ্ব সৃষ্টির রহস্য pdf,
গ্যালিলিও কিভাবে মারা যায়, গ্যালিলিও কেন বিখ্যাত, মহাবিশ্ব ও আমাদের পৃথিবী, মহাবিশ্বের
সৃষ্টি নিয়ে কোন তথ্যটি তোমার কাছে সবচেয়ে চমকপ্রদ মনে হয়েছে, গ্যালিলিওকে কেন আধুনিক
বিজ্ঞানের জনক বলা হয়, মহাবিশ্ব ও পৃথিবীর উৎপত্তি