কি আছে এই বায়রাক্টার ড্রোনে -
প্রযুক্তির উৎকর্ষতার এক বিস্ময়কর আবিষ্কার বাইরাক্টার টিবি টু
ড্রোন। প্রতিপক্ষের সকল প্রতিরক্ষা সিস্টেমকে ফাঁকি দিয়ে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার স্বয়ংক্রিয় সিস্টেম রয়েছে এই ড্রোনে। মুহূর্তেই
যুদ্ধের মোড় পরিবর্তন করে দেয়ার ক্ষমতা রয়েছে এ বাইরাক্টার টিবি টু ড্রোনের।পৃথিবীর
প্রায় সকল সমর বাহিনীরই আকর্ষণ রয়েছে এই
ড্রোনের প্রতি।
বায়রাক্টার টিবি-টু ড্রোন
কি?
বিশ্বের সবচেয়ে আধুনিক বিমান বিধ্বংসী ব্যবস্থা ও উন্নত গোলা নিক্ষেপের
ক্ষমতা সম্পূর্ণ এক বিস্ময়কর আবিষ্কারের নাম
বায়রাক্টার টিবি-টু ড্রোন।
তুরস্কের বায়রাক্টার টেকনোলজির
দ্বারা উদ্ভাবিত এই ড্রোনটি সামরিক ক্ষেত্রে সারা বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম
হয়েছে।
বায়রাক্টার টিবি-টু ড্রোনের
উদ্ভাবনের তথ্য : -
সালুক ও হালুক বায়রাক্টারের পিতা ওজদেমির বায়রাক্টার । ১৯৮৬ সালে
গাড়ি উৎপাদনকারী কোম্পানির যন্ত্রপাতি তৈরি প্রতিষ্ঠান হিসাবে তারা কোম্পানিটি তৈরি
করেন। তবে ২০০৫ সাল থেকে তারা মানবহীন বিমান শিল্পের ওপর বিনিয়োগ শুরু করেন।
তুরস্কের বাইকার টেকনোলজি কোম্পানি ২০১৪ সাল থেকে বাণিজ্যিকভাবে
বায়রাক্টার টিবি-টু ড্রোন উৎপাদন ও বিক্রি করতে শুরু করে।
প্রেসিডেন্ট রিচিপ তাইয়িপ এর্দোয়ানের জামাতা সালুক বায়রাক্টার
বলেন, "তার কোম্পানি বছরে ২০০ টিবি-টু ড্রোন তৈরি করতে পারে"।
২০১৪ সাল থেকে তুরস্কের সেনা বাহিনী ও ন্যাশনাল পুলিশ এই ড্রোন
ব্যবহার করছে। পূর্বে সিরিয়া ও লিবিয়ার সংঘাতে এবং সম্প্রতি নাগর্নো-কারাবাখের
যুদ্ধে এই ড্রোনের কার্যকর প্রয়োগ দেখা যায়।
রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধে এই ড্রোন যুদ্ধের মোড় ঘুরিয়ে দিতে সক্ষম
হয়।মূলত এর পরেই সারা বিশ্বে এই ড্রোনের চাহিদা বেড়ে যায়।
বায়রাক্টার টিবি-টু ড্রোনের
চাহিদা : -
কেন চাহিদা বাড়ছে বায়রাক্টার
ড্রোনের?
বায়রাক্টার টিবি-টু নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বাইকারটেক ডট কমের ওয়েবসাইটে
থেকে জানা যায়, "এটি হচ্ছে এমন এক ধরনের যুদ্ধাস্ত্র যা গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ,
নজরদারি এবং হামলায় অংশ নিতে সক্ষম।
বিশ্বের ১৪টি দেশ ইতিমধ্যে তুরস্ক থেকে এই ড্রোন কিনেছে। ইউক্রেন
ছাড়াও আজারবাইজান, ইথিওপিয়া, লিবিয়া. মরক্কো,
পোল্যান্ড, কাতার, তুর্কমেনিস্তান সহ আরো ১৬টি দেশ ড্রোন কেনার জন্য চুক্তি করেছে কোম্পানির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
তুরস্ক থেকে বায়রাক্টার টিবি-টু ড্রোন কিনছে বাংলাদেশ। সম্প্রতি
এ নিয়ে ড্রোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করেছে বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনী।
জনপ্রিয় হওয়ার কারণ : -
মূল কমান্ড সেন্টার থেকে
দূরে কোথাও একটি কন্টেইনার বা ট্রাকে মোবাইল বেজ স্থাপন করে সহজে ড্রোন পরিচালনা করার
সুবিধা রয়েছে । ফলে মিশনের প্রয়োজনে যেকোনো স্থানে থেকে ড্রোন উড্ডয়ন বা হামলা চালানো
যায়।
বায়রাক্টার টিবি-টু সম্পর্কে
যেসব তথ্য জানা যায় :-
১) বায়রাক্টার টিবি-টু ড্রোনে চারটি লেজার গাইডেড স্মার্ট রকেট
সংযুক্ত করা হয়েছে , যা লক্ষ্যবস্তুতে নির্ভুলভাবে আঘাত করতে পারে।
২) ড্রোনটি ঘণ্টায় প্রায় ১২৯ কিলোমিটার থেকে ২২২ কিলোমিটার গতিতে উড়তে সক্ষম।
৩) বেজ স্টেশন থেকে তিনশো কিলোমিটার দূর পর্যন্ত ড্রোনটি অপারেট
করা যায়।
৪) ড্রোনটির ভেতরে এমন কিছু সেন্সর রয়েছে, যার মাধ্যমে জিপিএসের
ওপর পুরোপুরি নির্ভর না করে ন্যাভিগেশন করতে পারে।
৫) সর্বোচ্চ সাতশো কেজি পর্যন্ত ওজন নিয়ে ড্রোনটি আকাশে উড়তে পারে। মোট জ্বালানি ধরে ৩০০ লিটার।
৬) ড্রোনটি টেক-অফ, ল্যান্ডিংসহ পুরোপুরি স্বয়ংক্রিয়ভাবে পরিচালিত
হতে সক্ষম । এটির কম্পিউরাইডজ সিস্টেমে তিনটি অটো পাইলট প্রোগ্রাম রয়েছে।
৭) বায়রাক্টার টিবি-টু ১৮ হাজার ফিট উচ্চতা থেকে কার্যক্রম চালাতে
পারে। তবে আকাশে সর্বোচ্চ ২৫ হাজার ফিট পর্যন্ত উড়তে পারে।এটির সর্বোচ্চ ২৭ ঘণ্টা
তিন মিনিট ওড়ার রেকর্ড রয়েছে।
৮) ড্রোনটিতে রিয়েল ইমাজেরি টাইম ট্রান্সমিশন সিস্টেম থাকায় একাধিক
ব্যবহারকারী একই সঙ্গে তাৎক্ষণিকভাবে উচ্চমানের ভিডিও দেখতে পারে।
৯) ওয়েব ভিত্তিক অ্যাপ্লিকেশন হওয়ার কারণে ইন্টারনেট ব্যবহার
করে ট্যাবলেট বা মোবাইল থেকেও নজরদারি করা সম্ভব।
**) এসব ড্রোনের একটি দুর্বল দিক হলো, এগুলো আকারে বড় আর তুলনামূলক
গতি কম। ফলে এগুলো কে গুলি করে নামানো সহজ।
ইউক্রেনের ব্যবহার করা এমন বেশ কিছু বায়রাক্টার ড্রোন রাশিয়ার বাহিনী ধ্বংস করে দিয়েছে।
সারকথা : -
ভবিষ্যতের সমরাস্ত্র ও যুদ্ধের কৌশল নির্ধারণে সামরিক সক্ষমতার যে আধুনিয়কান করা হচ্ছে, তার মধ্যে
ড্রোন একটা প্রধান প্রযুক্তি। এটি সক্ষমতা
বৃদ্ধির পরিকল্পনার আকর্ষণীয় সরঞ্জাম। বিশেষ
করে নাগার্নো-কারাবাখে ড্রোনের যে ভূমিকা দেখা গেছে, তাতে অনেক দেশই এখন ড্রোনের প্রতি
আকৃষ্ট হতে শুরু করেছে।
পোস্ট ট্যাগ -
সেলজুক বায়রাক্তার, কামিকাজি ড্রোন, 1,000 টাকার ড্রোন, 500 টাকার
ড্রোন, 100 টাকার ড্রোন, 3000 টাকার ড্রোন, 10000 টাকার ড্রোন, 200 টাকার ড্রোন, ড্রোন
ক্যামেরা দাম কত ২০২৩