Notification texts go here Contact Us Download Now!

ব্যাংকিং খাতের সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও সংকট উত্তরণ

আর্থিক খাতের অগ্রযাত্রায় ব্যাংক খাত, ব্যাংক খাতে সুশাসনের প্রয়োজনীয়তা, বাণিজ্য ভিত্তিক মানি লন্ডারিং, কি হতে যাচ্ছে বাংলাদেশে, মানি লন্ডারিং এর স্ত
Informative Desk
Please wait 0 seconds...
Scroll Down and click on Go to Link for destination
Congrats! Link is Generated
ব্যাংকিং খাতের সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও সংকট উত্তরণ
ব্যাংকিং খাতের সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও সংকট উত্তরণের উপায় -
দেশের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী চাইলেই  ব্যাংকিং সেক্টরে সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও সকল পর্যায়ের  দুর্নীতির রোধ করে  বিশ্বের দরবারে দেশকে একটি মডেল রাষ্ট্র  হিসেবে উপস্থাপন করা সম্ভব ।


ব্যাংকিং সেক্টরে সুশাসন : -
ব্যাংকিং সেক্টরে সুশাসন হলো সরকারি প্রতিষ্ঠান ও জনগণের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যমে সম্পদ পরিচালনার সুব্যবস্থা। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) মতে, "স্বচ্ছতা হলো, যেখানে মুদ্রা ও আর্থিক নীতি-সম্পর্কিত সকল তথ্য  জনগণকে বোধগম্য উপায়ে জানানো"। ব্যাংকিং সেক্টরে  সঙ্কটের বর্তমান প্রেক্ষাপটে, সুশাসন শব্দটি এখন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

বাংলাদেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থা ও এর  সুশাসন এক নজরে : -
"বাংলাদেশে বর্তমানে সরকারি-বেসরকারি, বাণিজ্যিক, বিশেষায়িত মিলে মোট ৬২টি ব্যাংক রয়েছে।  প্রথম ধাপে ১৯৮৩ সালে বাংলাদেশে ইসলামী ব্যাংক যাত্রা শুরু করে।  বর্তমানে ১০টি পূর্ণাঙ্গ ইসলামী ব্যাংক এবং অনেক গুলো প্রচলিত ব্যাংকের ইসলামী  শাখা ও উইন্ডো রয়েছে।

বাংলাদেশে প্রথম প্রজন্ম, দ্বিতীয় প্রজন্ম ও তৃতীয় প্রজন্মের ব্যাংক প্রতিষ্ঠা পর্যন্ত  আর্থিক খাতে যথেষ্ট সুশাসন ছিল।

তখন পর্যন্ত আর্থিক খাতে সুশাসন শক্তিশালী করণের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক বিভিন্ন আর্থিক খাতে সংস্কার নীতি গ্রহণ করে। আর্থিক খাতের আইনি কাঠামো শক্তিশালী করণ, গতিশীলতা আনয়ন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বায়ত্তশাসন প্রসারিত করা ও মানিলন্ডারিং অপরাধ প্রতিরোধ করার প্রয়াস চালানো হয়।

বর্তমানে ব্যাংকিং সেক্টরে প্রধান চ্যালেঞ্জ হলো- 'একটি ভালো করপোরেট শাসন নিশ্চিত করা যাতে আমানতকারী, গ্রহীতা ও বিনিয়োগকারীরা লাভবান হতে পারে। যাতে করে বাজার প্রসারিত হয়,মালিকানা বিস্তৃত হয়,বিকল্প অর্থায়নের সুযোগ তৈরি হয়; প্রবৃদ্ধি দ্রুত গতি লাভ করে; কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পায় এবং তা দেশের দারিদ্রতা কমাতে সাহায্য করে'।

ব্যাংকিং সেক্টরে সুশাসনের অভাব :-
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম.) গবেষকরা বলেছেন, মাত্র ৪৬ বিলিয়ন ডলারের অর্থনীতির দেশে ৬২টি ব্যাংক স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি। এমনকি চতুর্থ প্রজন্মের ব্যাংকগুলোর অনুমোদনের সময় সরকারও বলেছিল- এ দেশে আর ব্যাংকের দরকার নেই। তার পরও রাজনৈতিক বিবেচনায় দিতে হচ্ছে।  স্বাভাবিকের চেয়ে ব্যাংক  বেশি হলে অস্বাস্থ্যকর প্রতিযোগিতা অবশ্যম্ভাবী হয়ে দাঁড়ায়। এমনকি টিকে থাকার জন্য তাদেরকে অনেক অনৈতিক, অপরাধমূলক ও দুর্নীতি প্রবণতার আশ্রয় নিতে হয়। বাংলাদেশের ব্যাংকিং সেক্টরে এ ধরনের অভিযোগ ক্রমেই বাড়ছে।

বিআইবিএমের গবেষনায় আরো উঠে এসেছে , ৭২% ব্যাংক কর্মকর্তা মনে করেন ব্যাংক সংখ্যা কমাতে হবে। ব্যাংক মার্জারের মাধ্যমে এ খাতে ভারসাম্য ও সুশাসন ফিরিয়ে আনা প্রয়োজন । উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশে এ ধরনের মার্জারের ঘটনা ঘটছে। দেশের ব্যাংকিং খাতের জন্য একটি কার্যকর এক্সিট পলিসি থাকা দরকার। কোনো ব্যাংক খারাপ করলে তাকে এ নীতির মাধ্যমে নিজেকে একীভূতকরণের ব্যবস্থা নিতে হবে। কার্যকর গ্লোবালাইজেশনের অংশ হতে মার্জারে যেতেই হবে।


ব্যাংক খাতে সুশাসনের অভাবের সূত্রপাত হয় দেশের দুর্বল নীতির কারণে। নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান আইনের সংশোধন এবং জারী করা প্রজ্ঞাপন অনেকসময় ঋণ খেলাপিদের সহায়ক হয়েছে।  ব্যাংকগুলোতে জনস্বার্থকে বিঘ্নিত করে পারিবারিক প্রভাব বিস্তারের সুযোগ তৈরি করেছে।

কিছু ব্যাংকে আমানতের চেয়ে ঋণের পরিমাণ বেশি হওয়ায় তারা গ্রাহকের টাকা ফেরত দিতে ব্যর্থ হচ্ছে । এ পরিস্থিতির উন্নয়নে সরকারের সদিচ্ছা প্রয়োজন। তা নাহলে কখনো খেলাপি ঋণের প্রবণতা থামানো যাবে না।

ব্যাংকিং সেক্টরে বর্তমান সুশাসন ও শৃঙ্খলার নমুনা :-
রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোতে সংঘটিত  আর্থিক কেলেঙ্কারি ব্যাংক ব্যবস্থাপনায় চিড় ধরিয়েছে। পরিচালনা পর্ষদ ব্যাংকে সুশাসন, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা দেখাতে পারেনি। এ ধরনের অনিয়ম বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক গুলোতেও ছড়িয়ে পড়েছে।

পরিচালনা পর্ষদ ও ব্যাংক ব্যবস্থাপনার কার্যপরিধি আইনে নির্ধারিত রয়েছে। কিন্তু পরিচালনা পর্ষদকে অনেক সময় ব্যাংক ব্যবস্থাপনার কাজে হস্তক্ষেপ করতে দেখা যায়। ফলে ব্যবস্থাপকদের পক্ষে স্বাধীনভাবে সৃজনশীলতা কাজে লাগানো সম্ভব হয় না; বরং পরিচালনা পর্ষদের নির্দেশ অনুযায়ী কাজ করতে তারা বাধ্য হয়। এটি কোনোভাবেই ব্যাংক খাতের সুশাসনের জন্য মঙ্গলজনক হয় না।

সুশাসন নিশ্চিত করতে না পারায় ব্যাংক খাতে দুর্নীতি ও জবাবদিহির ঘাটতি পরিলক্ষিত হচ্ছে। পরিচালনা পর্ষদ ও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের মধ্যে পরস্পরিক দোষারোপের প্রবণতা দেখা যাচ্ছে।  পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান বা পরিচালকদের নিজস্ব ব্যবসা-বাণিজ্যে এবং আত্মীয়স্বজনের ব্যবসা-বাণিজ্যে সুবিধা দেয়া অথবা ঋণ বা চাকরি দেয়ার জন্য ব্যাংক ম্যানেজমেন্টকে চাপ দেন।

ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ ও স্বাধীনতার মধ্যে ভারসাম্যতা জরুরী:-
আর্থিক ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্য ২ টি, যথা:-
১) প্রধান উদ্দেশ্যই হলো আমানতকারী, গ্রাহক ও সাধারণ মানুষের স্বার্থ রক্ষা করা।অর্থনীতিকে অর্থায়ন ও বিনিয়োগের নানা সেবা দিয়ে সম্মৃদ্ধ করা।

২) দ্বিতীয় উদ্দেশ্য হলো- আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পদ্ধতিগত ঝুঁঁকি কমানো, উৎপাদন বৃদ্ধি ও বেকারত্ব হ্রাস এবং মানব কল্যাণ।

ব্যাংকিং সেক্টর সমস্যায় জর্জরিত হওয়ার কারণ ৫ টি,যথা :-
১) সুশাসনের অভাব।

২)  প্রণীত নীতিমালা ও আইন-কানুন সঠিকভাবে পালন না করা।

৩) সামষ্টিক অর্থনীতিতে টেকসই সুশাসন প্রতিষ্ঠা না হওয়া।

৪) ঋণগ্রহীতা ও কর্মকর্তার সমঝোতার মাধ্যমে অস্বচ্ছ উপায়ে বিপুল অর্থ লেন দেন।

৫) অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যথাযথ প্রশাসনিক ও আইনি ব্যবস্থা  না নেয়া।

এর ফলে তারল্য সঙ্কটে পড়েছে ব্যাংকিং সেক্টর। 

চ্যালেঞ্জ  মোকাবিলায় করণীয় : -

১) বাংলাদেশ ব্যাংকের উদ্যোগে  সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা।

২) দুর্বল ব্যংকে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি গ্রহণের করা।

৩) বাংলাদেশ ব্যাংক কে আর্থিক সুশাসন প্রতিষ্ঠায় কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

৪) আর্থিক কেলেঙ্কারিতে দায়ীদের বিচারের আওতায় আনা।

৫) ব্যাংক খাতের প্রতি আস্থা ফেরানোর উদ্যোগ নেয়া।

৬)  খেলাপি ঋণ আদায়ের ভূমিকা পালন করা।

৭)  নতুন খেলাপি ঋণ সৃষ্টির পথ বন্ধ করা।

৮) ব্যাংক খাতের ওপর বাংলাদেশ ব্যাংকের সুপারভিশন, গাইডেন্স ও তদারকি বাড়ানো।

৯)অর্থঋণ আদালতসহ আইনি প্রক্রিয়াকে আরো কার্যকর ও সংস্কার করা।

১০)মুনাফা অর্জনের অসুস্থ প্রতিযোগিতা বন্ধ করা

১১) ব্যাংকগুলোর জন্য ঋণ নীতিমালা পুনর্বিন্যাস করা।

১২) ঋণ বা বিনিয়োগকে বিভিন্ন খাতে সুসম বন্টন  করে  ব্যাংকিং সেক্টরে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা এখন সময়ের দাবি।

সুশাসনের উদ্দেশ্য গুলোর মধ্যে সামঞ্জস্যতা বজায় রেখে আরোপিত বিধানের প্রতি সম্মতি নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজন  স্বাধীন ও শক্তিশালী কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

সামগ্রিকভাবে ব্যাংকিং ‘সিস্টেমে সঙ্কট তৈরির জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থার জন্য সংশোধনমূলক নীতিমালা গ্রহণ ও প্রয়োগ নিশ্চিত করা প্রয়োজন।

সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও অর্থনৈতিক সেক্টরে স্থিতিশীল তা বজায় রাখতে পারলে অল্প সময়ের মধ্যে বাংলাদেশ বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে, ইংশা'আল্লাহ।


পোস্ট ট্যাগ -
আর্থিক খাতের অগ্রযাত্রায় ব্যাংক খাত, ব্যাংক খাতে সুশাসনের প্রয়োজনীয়তা, বাণিজ্য ভিত্তিক মানি লন্ডারিং, কি হতে যাচ্ছে বাংলাদেশে, মানি লন্ডারিং এর স্তর কয়টি, আর্থিক প্রতিষ্ঠানে সুশাসন বই

إرسال تعليق

Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.
AdBlock Detected!
We have detected that you are using adblocking plugin in your browser.
The revenue we earn by the advertisements is used to manage this website, we request you to whitelist our website in your adblocking plugin.
Site is Blocked
Sorry! This site is not available in your country.