Notification texts go here Contact Us Download Now!

ব্যাংক লোন সম্পর্কে ইসলামের বিধান কি ?

ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে ব্যবসা করা কি জায়েজ, কিস্তিতে টাকা নেওয়া কি হারাম, ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে বাড়ি করা কি জায়েজ, ইসলামী ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার ন
Informative Desk
Please wait 0 seconds...
Scroll Down and click on Go to Link for destination
Congrats! Link is Generated
ব্যাংক লোন সম্পর্কে ইসলামের বিধান কি ?

ব্যাংক লোন সম্পর্কে ইসলাম কি বলে ?
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের তৎকালীন এস ভি পি. জনাব মাহবুব সাহেব হজ্জের সফরে মক্কায় আমাকে বললেন,"আহাদ সাহেব,আপনি আমার জীবনে ২৪ ঘন্টায় বিনিয়োগ সেংশনের এক স্বরণীয় অভিজ্ঞতা হয়ে থাকবেন"। ২০১২ সালে ফ্ল্যাট ক্রয় করতে গিয়ে নিরুপায় হয়ে ইসলামী ব্যাংকের বিনিয়োগ নিয়েছিলাম। বিনিয়োগ গ্রহণের পরেই অনুভব করলাম, হৃদয় মনের সুখ আনন্দ দূর হয়ে এক ধরনের মানসিক যন্ত্রণা আমাকে কষ্ট দিতে লাগলো।মনে হতে লাগলো,সম্পদ বিক্রি করে হলেও দ্রুত ঋণ মুক্ত হওয়া জরুরী। আল্লাহর খাস রহমতে অতি অল্প সময়ে ঋণ মুক্ত হতে পেরেছিলাম। আলহামদুলিল্লাহ।


ব্যাংক থেকে লোন নেয়ার কথা ভাবছেন? কিন্তু তা হালাল  কিনা তা নিয়ে দিধাদন্ধে আছেন?  দলিল সহ জেনে নিন ব্যাংক থেকে লোন নেওয়া কি দুনিয়া আখেরাতের জন্যকল্যাণকর  হবে কিনা।

যেহেতু লোন নেয়া এখন অনেক ক্ষেত্রে  আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে । তাই এনিয়ে আমাদের উদ্বেগ বা আশঙ্কা থাকে যে লোন নেয়া জায়েজ হবে নাকি নাজায়েজ।

এ ব্যাপারে আমাদের উচিত কুরআন হাদিসের দলিল ও ইসলামিক স্কলারদের গবেষণালব্ধ মতামত জানা।

ব্যাংক থেকে লোন নেওয়া হারাম কিনা এই প্রশ্নের উত্তর এর পাশাপাশি ব্যাংক ঋণ নেয়া জায়েজ হওয়ার কিছু শর্ত এবং ইসলামী ব্যাংক থেকে লোন নেওয়া জায়েজ কিনা তা তুলে ধরবো আজকের এই পোস্টে।

একজন মুসলিম হিসেবে আমরা সবাই জানি যে ইসলামে সুদ হারাম। আর সুদের উপরেই প্রতিষ্ঠিত  লোনের প্রধান ভিত্তি।  আর যেহেতু সুদ সহই ব্যাংকের  লোন গ্রহণ ও পরিশোধ করতে হয়, তাই এ জাতীয় লোন কখনই হালাল হতে পারে না।

এখন কোনো প্রকার লোনই কি জায়েজ হবে না? একান্ত নিরুপায় হয়ে যদি লোন গ্রহন করতেই হয় তবে শর্ত সাপেক্ষে তা গ্রহণ করা যেতে পারে । অর্থাৎ ইসলামীক ব্যাংকিং ব্যবস্থার কিছু নিয়ম-কানন , কিছু গাইড লাইন ইসলামী স্কলার গন  ঠিক করে দিয়েছেন। এ গাইড লাইন মেনে  ব্যাংক আপনাকে লোন দিবে সেই লোন জায়েজ হবে বলে ধরা যায়।কিন্তু ইসলামী নাম দিয়ে হলেও কোন ব্যাংকই ১০০% সুদ মুক্ত হতে পারবে না।

ব্যাংকের ঋণ হারাম,  কি ব্যাংকের চাকরিও হারাম হবে? এটিও বর্তমান সময়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ আলোচ্য বিষয় ।

সুদ বা রিবা বর্তমানে ব্যাংক ঋণের সাথে অতপ্রত ভাবে জড়িত, যা সম্পূর্ণ রুপে নিষিদ্ধ বা হারাম করা হয়েছে। সুদের সাথে জরিতদের কঠিন শাস্তির ব্যাপারে কুরআন ও হাদিসে বিশেষভাবে সতর্ক করা হয়েছে।


এমন কিছু সতর্কবানী নিম্নে পেশ করা হলো :-

৭টি ধ্বংসাত্মক মহাপাপ :-
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, "তোমরা সাতটি ধ্বংসাত্মক কাজ থেকে বিরত থাকো। আসহাবে রাসুল  এব্যাপারে জিজ্ঞেস করলেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ , সে সাতটি ধ্বংসাত্মক কাজ কী? জবাবে তিনি বলেন,

১) আল্লাহর সঙ্গে শরিক করা,

২)জাদু করা,

৩)অন্যায়ভাবে মানুষ হত্যা করা,যা আল্লাহ নিষেধ করেছেন,

৪)সুদ খাওয়া,

৫)এতিমের সম্পদ আত্মসাৎ করা,

৬) জিহাদের ময়দান থেকে পালিয়ে যাওয়া,

৭) সতী মুমিন নারীদের উপর  অপবাদ দেওয়া। (বুখারি, হাদিস-২৭৬৬)

সুদের সাথে জরিতরা সবাই অভিশপ্ত।

বর্ণিত আছে যে, ‘ সুদ গ্রহীতা , সুদ দাতা, যে তার সাক্ষী থাকে এবং যে ব্যক্তি সুদের হিসাব-নিকাশ বা সুদের চুক্তিপত্র ইত্যাদি লিখে দেয় তাদের সবার প্রতি রাসুলুল্লাহ (সাঃ) লানত করেছেন।

(তিরমিজি, হাদিস : ১২০৬)

সুদখোর আল্লাহ ও তার রাসুলের সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত :-
সুদখোর ব্যাক্তি স্বয়ং আল্লাহ ও তার রাসুলের (সা.) সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত রয়েছে। ইরশাদ হয়েছে,"হে মুমিনগন, তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং সুদের যা বকেয়া আছে তা ছেড়ে দাও, যদি তোমরা মুমিন হও। যদি তোমরা তা না করো,তবে আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের পক্ষ থেকে তোমাদের বিরুদ্ধে  যুদ্ধের ঘোষণা শুনে নাও।
(সুরা বাকারা,আয়াত : ২৭৮-২৭৯)

সুদখোররা ব্যভিচারের অপরাধে অপরাধী :-
বিবাহিত নারী-পুরুষের মধ্যে ব্যভিচার অত্যান্ত  নিন্দনীয়। আর স্বীয় মায়ের সঙ্গে ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়া  কি পরিমাণ জঘন্য অপরাধ  হতে পারে? সুদখোর সম্পর্কে বর্ণিত হয়েছে যে, "সে তার আপন  মায়ের সঙ্গে ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়ার ন্যায় অপরাধে অপরাধি। আরো উল্লেখ রয়েছে যে, "সুদ ৭০ প্রকার পাপের সমষ্টি। তার মধ্যে সবচেয়ে নিম্নতম হলো—আপন মায়ের সঙ্গে ব্যভিচার করার সমতুল্য পাপ"নাউজুবিল্লাহ ।
(মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক,হাদিস- ১৫৩৪৫)

ইবাদত কবুলের পূর্বশর্ত :-
ইবাদত মহান আল্লাহর কাছে কবুল হওয়ার পূর্বশর্ত হচ্ছে হালাল পন্থায় উপার্জিত হতে হবে। কোরানুল কারীমে এরশাদ হয়েছে যে, "হে রাসুল গন,তোমরা পবিত্র ও হালাল বস্তু থেকে আহার করো এবং সৎকর্ম করো।
(সুরা : মুমিনুন,আয়াত- ৫১)

হারাম ও অবৈধ পন্থায় উপার্জিত সম্পদের আহার গ্রহণ করে ইবাদত করলে  কবুল হবে না।রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে লোক তার হালাল ও পবিত্র উপার্জন থেকে একটি খেজুর পরিমাণও দান করে,আল্লাহ্ তা তাঁর ডান হাত দ্বারা কবূল করেন। আর পবিত্র ও হালাল বস্তু ব্যতীত আল্লাহ্‌র দিকে কোন কিছু আগে গিয়ে পৌঁছে না। (বুখারি, হাদিস :৭৪৩০) সুদখোরদের বিরুদ্ধে আরো অনেক দলিল পাওয়া যায় । হারাম হারামই, হোক না তা অল্প অথবা বেশি। ব্যাংকের ঋণের সুদ কম হলেও তা সুদই। তাই সুদি ব্যাংকের ব্যাংক লোন গ্রহণ করা কোন অবস্থাতেই জায়েজ হবে না।

ব্যাংক লোন জায়েজ হওয়ার  শর্তসমূহ :-
একান্ত নিরুপায়  হয়ে ব্যাংকের লোন গ্রহণ করতে বাধ্য হলে নিম্নের শর্ত সমূহ পূরণ করতে হবে।

১. বিনিয়োগ গ্রহীতা ব্যাংকের কাছে পণ্য চাওয়ার পর প্রথমে ব্যাংককে তা খরিদ করে তা হস্তগত বা মালিকানা প্রতিষ্ঠা  করতে হবে। তারপর ক্লায়েন্টের নিকট তা বিক্রি করতে পারবে।

২. ব্যাংক যে পণ্য গ্রাহকের কাছে বিক্রি করবে,তা থার্ড পার্টি থেকে ক্রয় করে গ্রাহকের কাছে বিক্রি করতে হবে।

৩. বাস্তবেই ক্রেতার ওই পণ্যের জন্য অর্থ প্রয়োজন হতে হবে।যদি শুধু মাত্র পণ্যের নাম ব্যবহার করে নগদ টাকা ঋণ নেয়,বাস্তবে পণ্য খরিদের কোনো ইচ্ছা নেই, তাহলে কারবারটি হারাম হয়ে যাবে।

৪. বাস্তব সম্মত ও একচুয়াল ক্রয়-বিক্রয় হতে হবে।পূর্ব থেকেই ব্যাংকের সাথে চুক্তি রয়েছে এমন কোন দোকানকে ব্যবহার করে  টাল-বাহানা করা যাবে না।

৫. ব্যাংকের কাছে বিনিয়োগ প্রার্থীপূর্বেই পন্য  ক্রয় করে কাজে লাগিয়ে ফেলেছে,এখন ঐসব পণ্যের বকেয়া মূল্য পরিশোধের জন্য বা  অন্য কোনো পণ্যের নামে ব্যাংকের সঙ্গে মুরাবাহা করছে, তবে তা হবে হারাম এবং সুদি কারবার।

৬. মুরাবাহার একটি শর্ত হচ্ছে গ্রাহকের কাছে নির্ধারিত মূল্যে পণ্য বিক্রি  করে দেওয়ার পর তা আর বৃদ্ধি করা যাবে না। করলে তা সনাতনী ব্যাংকগুলো ন্যয়  সুদের অন্তর্ভূক্ত হবে।

৭. কোনো ধরনের হারাম পণ্য ক্রয়-বিক্রয় করা যাবে না।

ইসলামী ব্যাংকের লোন প্রসঙ্গ :-
ইসলামী ব্যাংকের লোন নয়, আছে শুধু  বিনিয়োগ। ইসলামী ব্যাংকের বিনিয়োগ বিষয়ে নিন্মে আলোকপাত করা হলো।

১.  বাড়ি নির্মাণ বিনিয়োগ :-
ইসলামী ব্যাংক বাড়ি করার জন্য বিভিন্ন জিনিসপত্র, যেমন- রড, সিমেন্ট, বালি ইত্যাদি, গ্রহিতা ক্রয় করতে পারবে না। এগুলো ব্যাংক করবে। আগ্রহীতা শুধু ইসলামী ব্যাংকের সাথে চুক্তি সম্পাদন করবে। ব্যাংক এখানে ইনভেস্ট করছে গ্রহীতার বাড়ি নির্মাণ করার জন্য।

২. ফ্রিল্যান্সিং বিনিয়োগ :-
একজন ফ্রিল্যান্সারের প্রয়োজনীয়  জিনিসপত্র ইসলামী ব্যাংক  ক্রয় করে দিবে আগ্রহীতাকে পরে টাকা পরিষোধ করতে হবে।

৩.  মহিলাদের জন্য উৎপাদন বিনিয়োগ :-
নারীদের উৎপাদন প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড বিনিয়োগ করে থাকে।

ব্যাংকের লোনে ব্যবসা করা কি জায়েজ ?
জীবন বিপন্ন হওয়ার আশঙ্কা না থাকলে কোন সুদি ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে ব্যবসা করা জায়েজ হবে না। গ্রহীতা  ইসলামী ব্যাংকের বিনিয়োগ নিয়ে হালাল পণ্যের হালাল পদ্ধতিতে ব্যবসা করতে পারেন।

শেষকথা :-
সুদি ব্যাংক থেকে লোন নেয়া ইসলামী শরীয়ত অনুমোদন করে না। ইসলামী ব্যাংক সমূহ থেকে বিনিয়োগ নিয়ে ব্যবসা করা যেতে পারে, কিন্তু ১০০% সুদ উন্মুক্ত হওয়ার কোন সুযোগ নেই বলেই অধিকাংশ ইসলামিক স্কলার মত প্রকাশ করেন।পরিপূর্ণ ইসলামী রাষ্ট্র ছাড়া সম্পর্নরুপে সুদ মুক্ত ব্যাংকিং সম্ভব হচ্ছে না। আল্লাহ আমাদের ত্রুটি বিচ্যুতি ক্ষমা করে দিন, আমিন।


পোস্ট ট্যাগ -
ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে ব্যবসা করা কি জায়েজ, কিস্তিতে টাকা নেওয়া কি হারাম, ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে বাড়ি করা কি জায়েজ, ইসলামী ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার নিয়ম, ইসলামে লোন নেওয়ার পদ্ধতি, কিস্তি নেওয়া কি হারাম, সুদ ছাড়া ব্যাংক লোন, সমিতি থেকে লোন

إرسال تعليق

Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.
AdBlock Detected!
We have detected that you are using adblocking plugin in your browser.
The revenue we earn by the advertisements is used to manage this website, we request you to whitelist our website in your adblocking plugin.
Site is Blocked
Sorry! This site is not available in your country.