Notification texts go here Contact Us Download Now!

ইসলামের দৃষ্টিতে ইন্সুরেন্স করা কি হালাল ?

ইসলামী লাইফ ইন্সুরেন্স কি জায়েজ, বীমা কোম্পানিতে চাকরি করা কি জায়েজ, হেলথ ইন্সুরেন্স কি জায়েজ, শিক্ষা বীমা কি জায়েজ, বীমা কেন হারাম, ইসলামী বীমা ক
Informative Desk
Please wait 0 seconds...
Scroll Down and click on Go to Link for destination
Congrats! Link is Generated
ইসলামের দৃষ্টিতে ইন্সুরেন্স করা কি হালাল ?
ইসলামের দৃষ্টিতে ইন্সুরেন্স :-
ফারিষ্ট ইসলামী লাইফ ইন্সুরেন্সের স্মরণিকায় আল্লামা দেলাওয়ার হোসেন সাঈদী ও মাওলানা কামাল উদ্দিন জাফরী ওস্তাদের বাণী দেখে রিয়াদে চাকরির পাশাপাশি ইন্সুরেন্স এর কাজ শুরু করলাম। তিন মাস কাজ করার পরেই দেখলাম ইন্সুরেন্সে কাজ করে অর্থনৈতিকভাবে আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ হওয়ার মত অবস্থা। কোম্পানি মদিনায় ট্রান্সফার করায় পরবর্তী কর্মস্থল হয় মদিনায়। মসজিদে নববীতে বসা অবস্থায় হঠাৎ মনে হল ইন্সুরেন্সে কাজ করা এবং এর ইনকাম হালাল কিনা? বিষয়টির শরীয়তের ভিত্তি ও হালাল-হারামের  বিষয় নিয়ে স্কলারদের সাথে বসলাম। বহাসে শায়েখ গন প্রমাণ করলেন," ইসলামে ইন্সুরেন্স হারাম"।

রমজান মাসে আল্লামা দেলোয়ার হোসেন সাঈদী রাহেমাহুল্লাহর সাথে বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করে ইন্সুরেন্সের কাজ ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলাম।

ইন্সুরেন্স / বীমার পরিচয় -

ইন্সুরেন্স হলো এক ধরণের অর্থনৈতিক লেনদেনের চুক্তি।  ইংরেজিতে insurance এবং আরবীতে التامين বলা হয়।আভিধানিক অর্থে ইন্সুরেন্সে হলো গ্যারান্টি দেওয়া, নিশ্চয়তা প্রদান করা।

পরিভাষিক অর্থে ইন্সুরেন্স হলো ক্রমিক চাঁদার বিনিময়ে নির্দিষ্ট মেয়াদ শেষ হলে বা তার আগে বীমাকারীর সম্পত্তিহানী বা মৃত্যুতে তার প্রতিনিধি মোটা অংকের টাকা পাওয়ার চুক্তি।

তাত্ত্বিক ভাবে বীমা বা ইন্সুরেন্স হলো “ভবিষ্যতে অনিশ্চিত কোনো ক্ষতির বা দুর্ঘটনা থেকে বাচার জন্যে নিদিৃষ্ট কিছু টাকা (প্রিমিয়াম) ক্ষতিপূরণ হিসেবে পরিশোধ করা।

বীমার প্রকার :-

বিপদ বা দুর্ঘটনার আশঙ্কায় যে বীমা গুলো করা হয় তাকে তিন ভাগে ভাগ করা যায় ।

ক) জীবন বীমা।

খ) দ্রব্য সামগ্রীর বীমা।

গ) দায়-দায়িত্বের বীমা।

ইসলামের দৃষ্টিতে ইন্সুরেন্স/বীমা করা কি জয়েয ?

না, শরীয়তের দৃষ্টিকোন থেকে ইন্সুরেন্স বা বীমা করা বা করানো সম্পূর্ণরুপে নাজায়েয ও হারাম লেনদেন। ওআইসির শাখা সংস্থা “আর্ন্তজাতিক ফিকহ একাডেমি” ও সৌদীআরবের প্রখ্যাত ধর্মীয় সংস্থা “উচ্চ উলামা পরিষদ” সহ বিশ্বের প্রায় সকল নির্ভরযোগ্য  প্রতিষ্ঠান এবং বেশিরভাগ ফকীহ এ সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন যে, সব ধরণের বানিজ্য বীমাই নাজায়েজ ও হারাম। তা হোক সম্পদের বীমা অথবা জীবনের বীমা। উলামায়ে কিরাম এ বিষয়ে একাধিক কারণ উল্লেখ করেছেন।

ইসলামী শরীয়তের দৃষ্টিতে জীবন বীমা :-
১) বীমা কারি প্রথম কিস্তি জমা  করে পরবর্তীতে কন্টিনিউ না করলে তার পুরো টাকাই হারাতে হয়।ইন্সুরেন্স কোম্পানি প্রথম কিস্তির বেশিরভাগ টাকাই এজেন্টের মাঝে বন্টন করে দেয়ায় এই জটিলতা ও প্রতারণা শিকার হন বীমা কারী ব্যক্তি।

২) বীমাকারী প্রিমিয়াম বাবদ ধরুন ১২০০০ হাজার টাকা জমা করেছে, বীমা কোম্পানী তা নিশ্চিত ভাবে আদায় করে দিবে। তবে সুদ সহ যে লাভ দিবে তা সম্পূর্নরুপে হারাম হবে। ১২০০০ হাজার যে পাবে তাতে জুয়া নেই তবে তাতে প্রতারণা রয়েছে।

প্রতারণা বলার কারণ সে জানে না যে সে কি ১২০০০ হাজার টাকা পাবে না দশ লাখ টাকা পাবে। যদি বীমা কারি এ দশ বছরের মধ্যে মারা যায় তাহলে দশ লাখ পাবে। আর যদি মারা না যায় তাহলে বার হাজার টাকাই পাবে। সুতরাং এর পরিমাণ নির্দিষ্ট নয়। এ কারণেই একে প্রতারণা বলা যায়। আবার ১২০০০ হাজারের বিপরীতে দশ লাখ টাকা, এটা নিশ্চিত ভাবে প্রতারণা। এতে সুদ ও প্রতারণা উভয়ই রশেছে সুতরাং জায়েয নেই।

৩) দ্রব্য সামগ্রীর বীমা/ইন্সুরেন্স :-

Goods insurance বা আরবীতে تامين الاشياء হলো গাড়ি, বাড়ি, ফ্রিজ, কম্পিউটার ইত্যাদির বীমা এ শ্রেণীর অর্ন্তভুক্ত। দ্রব্য সামগ্রীর বীমা করার পদ্ধতি হলো বীমাকারী যে দ্রব্যের বীমা করতে চায়, বীমা কোম্পানী উক্ত দ্রব্য পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখে এ মর্মে গ্যারান্টি প্রদান করবে যে মেয়াদের মাঝে উক্ত দ্রব্য নষ্ট হয়ে গেলে কোম্পানীর ব্যয়ে মেরামত করে দিবে।আর যদি সেটা কোন কারণে একেবারে নষ্ট বা ধ্বংস হয়ে যায় তবে কোম্পানী বীমাকারীকে অনুরূপ একটি  ক্রয় করে দিবে। এ পর্যন্ত বীমাকারীকে ঐ নির্ধারীত মেয়াদ পর্যন্ত বীমা কোম্পানীকে বরাবরে মাসিক/ত্রৈমাসিক / বাৎসরীক কিস্তির একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা পরিশোধ করে যেতে হবে।

যদি নির্ধারিত সময়ের মাঝে উক্ত দ্রব্য সামগ্রী  নষ্ট বা ধ্বংস হয়ে যায় তাহলে বীমা কোম্পানী তা মেরামত করে দিবে বা ক্ষতিপূরণ দিবে। আর যদি নষ্ট বা ধ্বংস না হয় তাহলে জমাকৃত টাকার বিনিময়ে কোম্পানী বীমাকারীকে কিছুই ফিরিয়ে দেয় না। এটাই হলো দ্রব্য সামগ্রীর বিপরীতে বীমা।

জমহুর ওলামায়ে কেরামের মতে দ্রব্য সামগ্রীর ইনস্যুরেন্স  নাজায়েয এবং হারাম।কারণ  এক পক্ষ থেকে আদায় করা হলো নিশ্চিত এবং অপর পক্ষ থেকে পাওয়া হলো অনিশ্চিত। একে বলা হয়  معلق علي الخطر । যদি দুর্ঘটনা ঘটে তাহলে সে পাবে আর না ঘটে বীমা কারি পাবে না। তাই এতে غرر এবং জুয়া রয়েছে।

দায়-দায়িত্বের বীমা :-

Third party insurance  আরবীতে যাকে تامين المسؤليات বলা হয়। অর্থাৎ ভবিষ্যতে কোন ব্যক্তির উপর কোন আর্থিক ক্ষতিপূরণের দায়ভার চেপে বসার আশংকায় ইন্সুরেন্স /বীমা করা। যেমন কোন ব্যক্তি রোডে গাড়ী নামালে একসিডেন্টের কারণে যদি কোন ব্যক্তির সম্পদহানি ঘটে, তাহলে গাড়ির মালিককে তার ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। এজন্য গাড়ির মালিক গাড়ির বীমা করে রাখেন এবং নির্দিষ্ট হারে প্রিমিয়াম পরিশোধ করতে হয়। যদি উক্ত গাড়ি একসিডেন্ট করে কারো প্রাণহানি ঘটায় তাহলে বীমা কোম্পানী তার ক্ষতিপূরণ দিয়ে দিবে। আর যদি  কোন দুর্ঘটনা না ঘটে তাহলে বীমাকারী জমাকৃত টাকার কিছুই ফেরৎ পাবে না। এটাকে দায়-দায়িত্বের বীমা/ইন্সুইরেন্স  বলা হয়।

ইসলামী শরীয়তে দায়-দায়িত্বের বীমার দৃষ্টিভঙ্গি :-
জমহুর ওলামায়ে কেরামের মতে দ্রব্য সামগ্রীর বিপরীতে বীমা করা নাজায়েয এবং হারাম।বীমা কারীর পক্ষ থেকে আদায় করা হলো নিশ্চিত এবং বীমা কোম্পানির  পক্ষ থেকে পাওয়া হলো অনিশ্চিত-এবং তা معلق على الخطر। যদি দুর্ঘটনা ঘটে তাহলে বীমা কারী পাবে আর  না ঘটলে সে কিছুই পাবে না অতএব এতে غرر এবং জুয়া রয়েছে।

বীমা কোম্পানীর শ্রেনীভেদ :
কর্ম পদ্ধতি ও গঠন প্রনালী অনুযায়ী  বীমা আবার ২ প্রকার:-

ক) কমার্শিয়াল বীমা।

খ) পারস্পরিক সহযোগিতা বীমা।

ইসলামী শরীয়তের দৃষ্টিতে কমার্শিয়াল বীমা :-

ধর্মীয়, নৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষতির দিক বিবেচনা করে বর্তমানে ফিকাহবিদরা বা স্কলার গন কমার্শিয়াল বীমাকে সম্পূর্ণরুপে নাজায়েয ও হারাম বলে ঘোষণা করেছেন।কারণ কমার্শিয়াল ইন্সুইরেন্সে ربما الفضل বা অধিক প্রদান জনিত সুদ ও ربا النسية বা সময়ের ব্যবধান জনিত সুদ দুটোই বিদ্যমান।

এ ধরণেট চুক্তিতে কখনো কখনো এক জনের মাল বিনিময় ছাড়া শুধুমাত্র শর্তের কারণে অন্যজন লাভ করে থাকে। আর ব্যবসায়ীক চুক্তিতে অন্যের মাল বিনিময় ছাড়া গ্রহন করা হারাম। কেননা এটা স্পষ্ট সুদ।

বীমার চুক্তিতে ক্ষতি না করেই বা ক্ষতির কারণ না হয়েই বীমা কোম্পানীকে ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য থাকতে হয়।

পারস্পরিক সহযোগিতা বীমা :-

একই ধরণের ক্ষতির আশংকা সম্বলিত ব্যক্তিরা মিলে একটি ফান্ড এ উদ্দেশ্যে গঠন করেন যে, সদস্যদের মধ্যে কেউ যদি কোন দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত হন তাহলে এই ফান্ড থেকে তার ক্ষতিপূরণ  দেয়া হবে। অবশ্য কি ধরণের দুর্ঘটনায় ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে।

ইসলামী শরীয়তে ওলামায়ে কিরামের মতে পারস্পরি সহযোগিতার উদ্দেশ্যে এটি জায়েয।। তবে শর্ত হলো সুদের কোন প্রক্রিয়ার সাথে এটিকে জড়িয়ে ফেলা যাবে না। যদি এ ফান্ডের টাকা অবৈধ খাতে বিনিয়োগ করে মুনাফা অর্জন করা হয় বা সুদের ভিত্তিতে লোন দেয়া হয় তাহলে তা হারাম হয়ে যাবে।

সরকারের পক্ষ থেকে যে বীমা করা আবশ্যক বা না করলে তার প্রয়োজন পুরা করা সম্ভব নয় ওলামায়ে কেরামের মতে সে জিনিষের উপর বীমা করা যেতে পারে।

ডেঙ্গু জ্বর রোধে করণীয় কি ?

কেউ ভুল করে ইনসুরেন্স / বীমা করে ফেললে এখন তার করণীয় :-

ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় ইন্সুরেন্সে জড়িয়ে পড়লে এবং ভুল বুঝতে পারলে আল্লাহর দরবারে  তওবাহ করে সাথে সাথে তার এ ইন্সুরেন্স বা বীমার কার্যক্রম সম্পূর্ণরুপে বন্ধ করে দিতে হবে। সম্ভব হলে তাৎক্ষনাত তার জমাকৃত টাকা উঠিয়ে ফেলতে হবে।

আর কোন ভাবে  তুলতে সক্ষম না হলে যখনই ইন্সুরেন্স/বীমা কোম্পানি  সম্পুর্ন টাকা প্রদান করবে তখন শুধুমাত্র নিজের আসল জমাকৃত টাকা রেখে বাকী গরীবদের মাঝে সাওয়াবের নিয়ত ছাড়া দান করে দিবে।

উপসংহার :-

ইন্সুরেন্স কোম্পানির কাছে  প্রতারিত হয়ে হাজারো মানুষ সর্বস্ব হারিয়ে দিশেহারা। ইসলামী অইসলামী নামে বেনামী ব্যাঙের ছাতার মত গজিয়ে উঠা ইন্সুরেন্স কোম্পানিগুলো সহজ সরল মানুষগুলোকে টার্গেটে পরিণত করেছে।ইসলামী জ্ঞানে অনভিজ্ঞ জনেরা ইসলামী লেভেল লাগিয়ে ইন্সুরেন্স ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের প্রতারণা থেকে আল্লাহ সকলকে হেফাজত করুন, আমিন।

পোস্ট ট্যাগ -
ইসলামী লাইফ ইন্সুরেন্স কি জায়েজ, বীমা কোম্পানিতে চাকরি করা কি জায়েজ, হেলথ ইন্সুরেন্স কি জায়েজ, শিক্ষা বীমা কি জায়েজ, বীমা কেন হারাম, ইসলামী বীমা কি জায়েজ, ইসলামী বীমা কাকে বলে, বীমা করা কি জায়েজ

Post a Comment

Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.
AdBlock Detected!
We have detected that you are using adblocking plugin in your browser.
The revenue we earn by the advertisements is used to manage this website, we request you to whitelist our website in your adblocking plugin.
Site is Blocked
Sorry! This site is not available in your country.