বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) কতৃক পরিচালিত জরিপে দেশের
পর্যটকেরা শুধু ভ্রমনের উদ্দেশ্যেই যে সকল দর্শনীয় স্থানে বেশী গিয়েছেন তার একটি তালিকা
প্রকাশ করেছেন । বিবিএস এর তালিকা মতে সেরা ১০টি দর্শনীয় স্থানের বর্ণনা নিম্নরুপ
-
১. কক্সবাজার
পর্যটকদের ভ্রমনের তালিকার শীর্ষে রয়েছে কক্সবাজার। কক্সবাজার ‘পর্যটন
রাজধানী’ হিসেবেও পরিচিত। বছরজুড়েই পর্যটকদের আনাগোনায় মূখরিত হয় বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত
কক্সবাজার। অ্যাডভেঞ্চার প্রিয় মানুষদের পছন্দের শীর্ষে রয়েছে টেকনাফ-কক্সবাজার মেরিন
ড্রাইভ সড়ক । কক্সবাজার নানা পর্যটন ও বিনোদনকেন্দ্রে ভরপুর।
২. পতেঙ্গা, চট্টগ্রাম
চট্টগ্রামের পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতে অস্তমিত সূর্যের আলোর রূপ দেখতে
ও বিশুদ্ধ বাতাসে স্বস্থির নিঃশ্বাস নিতে আপনজনদের নিয়ে ছুটে যান অনেকেই । সৈকতের দীর্ঘ্য
৫ কি. মি. এলাকা সৌন্দর্য বর্ধনের কারণে পর্যটকের সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে।
৩. কুয়াকাটা, পটুয়াখালী
পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকতে একই সাথে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত
উপভোগের সুযোগ মিলে। পর্যটকদের পছন্দের তালিকায় এ স্থানটি শীর্ষ ৩ এ রয়েছে।
৪. শ্রীমঙ্গল, মৌলভীবাজার
সবুজ চা-বাগানের পাশাপাশি একাধিক দর্শনীয় স্থান রয়েছে শ্রীমঙ্গলে।
দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে রয়েছে পাঁচ তারকা হোটেলসহ অসংখ্য মানসম্পন্ন রিসোর্ট। বিবিএস
এ তথ্য মতে শ্রীমঙ্গল পর্যটকদের জনপ্রিয়তার চতুর্থ স্থানে রয়েছে।
৫. বান্দরবান
পাহাড়চূড়া ও ঝর্ণার প্রশান্ত সৌন্দর্য উপভোগ করতে বান্দরবানে যান
পর্যটকেরা। নীলাচল থেকে নীলগিরি ও মেঘলা থেকে মিরিঞ্জা পর্যন্ত ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে
অসংখ্য দর্শনীয় স্থানের বাহার। এখানে প্রাকৃতিক ও কৃত্রিম সব ধরনের সৌন্দর্য একসাথে
উপভোগ করা যায়।
৬. সাজেক উপত্যকা, রাঙামাটি
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা অপূর্প এক নাম সাজেক। এখানে পাহাড়ের চূড়ায়
মেঘের উপস্থিতি স্থানটিকে দিয়েছে নতুন মাত্রা। পর্যটকদের অধিক আনাগোনার কারণে এখানে
গড়ে উঠেছে শতাধিক রিসোর্ট ও কটেজ ।
৭. বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প
জাদুঘর, সোনারগাঁ, নারায়ণগঞ্জ
১৯৭৫ সালে বিশিষ্ট শিল্পাচার্য
জয়নুল আবেদিনের স্ব-উদ্যোগে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন
প্রতিষ্ঠা করে গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের কারুশিল্পীদের
নিজ হাতে তৈরি ঐতিহ্যবাহী প্রায় ৫,০০০ নিদর্শন এখানে সংরক্ষণ করা হয়েছে ।
৮. রাঙামাটি
ঝুলন্ত সেতু, কাপ্তাই হ্রদ, রাজবন বিহারসহ রাঙ্গামাটি জেলা সদরের
বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রে সারা বছর পর্যটকেরা ভ্রমণ করে থাকেন।
৯. সুন্দরবন
বাংলাদেশ সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রকৃতি প্রেমীরা সুন্দরবনের
সৌন্দর্যে মুগ্ধ। সুন্দরবন প্রকৃতি প্রেমীদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। সমুদ্রের তীরবর্তী
এই ম্যানগ্রোভ বনটিকে দেখতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পর্যটকেরা ছুটে আসেন।
১০. বাংলাদেশ জাতীয় চিড়িয়াখানা,
ঢাকা
যান্ত্রিক পরিবেশে বেড়ে উঠা আমাদের শিশুরা ঢাকার বুকেই বন্য পরিবেশ
উপভোগ করতে ও বিভিন্ন বন্য প্রানীদের স্বচক্ষে দেখতে তাদের অবিভাবকদের সাথে বাংলাদেশ
জাতীয় চিড়িয়াখানায় গিয়ে থাকেন। বাঘের গর্জন ও সিংহকে খাঁচায় বন্দি দেখে শিশুরা উচ্ছসিত
হয়ে থাকে। এটি শিশুদের পাশাপাশি বড়দেরও বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। এখানে
বনের বাঘ-সিংহ সহ প্রায় সকল বন্য প্রানীর উপস্থিতি রয়েছে।
এর বাইরেও নয়নাভিরাম বাংলাদেশে আরও ছোট বড় অসংখ্য বিনোদন কেন্দ্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে।
তাদের মাঝে উল্লেখযোগ্য কিছু বিনোদন কেন্দ্রের তালিকা নিম্নে দেওয়া হলো -
১। সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধ।
২। কক্সবাজারের সেন্ট মার্টিন।
৩। সিলেটের জাফলং।
৪। কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়ায় অবস্থিত বাউলসম্রাট ফকির লালন শাহের মাজার।
৫। ঢাকার লালবাগ কেল্লা।
৬। দিনাজপুরের কান্তজিউ মন্দির।
৭। বগুড়ার মহাস্থানগড়।
৮। খাগড়াছড়ি বৌদ্ধবিহার।
৯। নওগাঁর পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার।
১০। সিলেটের সীমান্তবর্তী জৈন্তাপুর উপজেলার লালাখাল।
১১। মেহেরপুরের মুজিবনগর স্মৃতিসৌধ।
১২। সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার রাতারগুল ও বিছনাকান্দি।
১৩। বাগেরহাটের ষাট গম্বুজ মসজিদ।
১৪। নাগরপুর জমিদার বাড়ী, টাঙ্গাইল।
১৫। ২০১ গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদ, গোপালপুর, টাঙ্গাইল।
উপসংহার -
নয়নাভিরাম সৌন্দর্যের নীলাভূমি এই বাংলাদেশ পুরোটাই প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে
ভরপুর। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের পাশাপাশি কৃত্রিমভাবে তৈরী করা দর্শনীয় স্থানগুলো পর্যটকদের
আকৃষ্ট করে। বাংলাদেশে পার্কগুলো সারা বছরই পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত থাকে।
পোস্ট ট্যাগ -
বাংলাদেশের ৫০ টি দর্শনীয় স্থান, বাংলাদেশের ৬৪ জেলার দর্শনীয়
স্থান, বাংলাদেশের দর্শনীয় স্থানের নামের তালিকা, বিশ্বের সেরা দর্শনীয় স্থান, বাংলাদেশের
দর্শনীয় স্থান রচনা, বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর পার্ক কোনটি, বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর
জায়গা কোনটি, এলাকার দর্শনীয় স্থান